মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) ৫ম জাতীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথির ভাষণ দেন। ছবি: বাসস

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রিজার্ভ সম্পর্কে জনগণকে বিভ্রান্তকারী লোকদের নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, দেশে পর্যাপ্ত রিজার্ভ রয়েছে এবং রিজার্ভ জনসাধারণের কল্যাণে ব্যবহার করা হচ্ছে। তাঁর সরকার জনগণের কল্যাণে সম্ভাব্য সবকিছু করবে, কাউকে ভোগান্তি পোহাতে হবে না।

অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, স্বাচিপের সভাপতি অধ্যাপক ডা. এম ইকবাল আর্সলান ও মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এম এ আজিজ বক্তৃতা করেন।

মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা: আ ফ ম রুহুল হক এমপি। জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং শান্তির প্রতীক বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। পরে তিনি স্বাচিপের স্থায়ী কার্যালয়ের ফলক উন্মোচন করেন। খবর বাসসের।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‌’এটা ঠিক যে আমাদের রিজার্ভ থেকে (দেশবাসীর কল্যাণে) খরচ করতে হবে। আমাদের কাছে এত পরিমাণ রিজার্ভ মানি আছে যে, আমরা পাঁচ মাসের জন্য খাদ্য আমদানি করতে পারি, যদিও যেকোনো দুর্যোগ কাটিয়ে উঠতে তিন মাসের জন্য খাদ্য আমদানির জন্য রিজার্ভ থাকতে হয়।’

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) ৫ম জাতীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন।

চাল, গম, ভোজ্যতেল, জ্বালানি তেল এবং ভ্যাকসিন আমদানিসহ জনগণের কল্যাণে এই রিজার্ভ ব্যবহার করা হচ্ছে বলে উল্লেখ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষ রিজার্ভের বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠছে এবং তারা চা-স্টলে ছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় রিজার্ভ নিয়ে আলোচনা করছে। কোভিড-১৯, ভর্তুকি দেওয়া, কিছু প্রকল্পে বিনিয়োগ এবং বিদেশী ঋণ পরিশোধ করায় এই টাকা ব্যয় হয়েছে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ২০০৮ এ নির্বাচিত হয়ে ২০০৯ সালে যখন সরকার গঠন করে তখন রিজার্ভ ছিল ৫ বিলিয়নের কিছু ওপরে। করোনাকালে যেহেতু আমদানী বন্ধ ছিল, রেমিট্যান্স সরকারীভাবে এসেছে, কোনো হুন্ডি ব্যবসা ছিল না, কোনোরকম খরচ ছিল না, তাই আমাদের রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছিল। তবে, বাংলাদেশ তাদের সব ঋণ সবসময় সঠিকভাবে পরিশোধ করে এসেছে এবং এক বারের জন্যও ঋণ খেলাপি হয়নি।
সরকারের যত সমস্যা হোক এই অবস্থাটা তাঁর সরকার ধরে রাখতে পেরেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোভিড সংক্রমণ কমে আসার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের আমদানী-রপ্তানী বেড়েছে। দেশের কাজ বেড়েছে, তাছাড়া ভ্যাকসিন ক্রয় এবং করোনা মোকাবিলার আনুষঙ্গিক ব্যয় মেটাতে হয়েছে। চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ দিতে হয়েছে- এগুলোর জন্য টাকা খরচ হয়েছে। পানির মতো টাকা খরচ করতে হয়েছে। তারপরে এখন আমাদের খাদ্য আমদানী করতে হচ্ছে। এর জন্য অধিক দামে আমদানীতে অর্থ ব্যয় হচ্ছে।

সরকার প্রধান বলেন, যতই দাম বাড়ুক, সরকার ইউক্রেন-রাশিয়া, কানাডা থেকে এই যুদ্ধকালীন সময়েো গম কিনে আনছে। এ জন্য ২০০ ডলারের গম ৬০০ ডলারে কিনতে হচ্ছে। ভোজ্য তেল সেই ব্রাজিল থেকে শুরু করে পৃথিবীর যে দেশে পাওয়া যায় আমরা নিয়ে আসছি। মানুষের ভোগ্য পণ্য প্রাপ্তিতে যাতে কোনো সমস্যা না হয় সেজন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছি। মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে সরকার।’
‘রিজার্ভ শুধু আমাদের দেশে নয় পৃথিবীর অনেক দেশের রিজার্ভ কমে গেছে,’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাঁর সরকার শ্রীলংকাকে কিছু সহযোগিতা করেছে এবং আরো অনেক দেশ বাংলাদেশের কাছে সহযোগিতা চেয়েছে উল্লেখ করে তিনি সেসব দেশের নাম উল্লেখ করেননি।