কেরানীগঞ্জ মডেল থানা-পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার আসামিরা। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

রাজধানী ঢাকায় দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ব্যবহার করে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী এতিমখানা লিল্লাহ বোর্ডিংয়ের নামে ধর্মপ্রাণ ও সহজ-সরল মানুষের কাছ থেকে চাঁদা তোলা ও সেই অর্থ আত্মসাৎকারী চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ঢাকার কেরানীগঞ্জ মডেল থানা এলাকা থেকে ১৩ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার দুই আসামির নাম মো. ইয়াসিন ওরফে হুজুর ইয়াসিন (৩০) ও তাঁর স্ত্রী সিমা আক্তার (২৫)।

কেরানীগঞ্জ মডেল থানা-পুলিশ জানায়, একটি সংঘবদ্ধ চক্র দীর্ঘদিন ধরে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার আরশিনগর এলাকায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে ইহসানিয়া দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানা লিল্লাহ বোর্ডিংয়ের নাম দিয়ে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ব্যবহার করে ঢাকাসহ আশপাশের এলাকায় চাঁদা তোলা এবং সেই অর্থ আত্মসাৎ করছে বলে অভিযোগ ছিল। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে সংঘবদ্ধ চক্রটিকে ধরতে কেরানীগঞ্জ মডেল থানা-পুলিশ গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কেরানীগঞ্জ মডেল থানা-পুলিশের একটি দল ১৩ এপ্রিল বিকেল পৌনে ৪টার দিকে থানার আরশিনগর এলাকায় অভিযান চালিয়ে ইয়াসিন ও তাঁর স্ত্রীকে নগদ চাঁদার টাকা, রশিদ বই, প্রচারপত্র ভিজিটিং কার্ডসহ গ্রেপ্তার করেছে।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত অসহায় দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ও আশপাশের লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে এই চক্র দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য মাদ্রাসা নির্মাণ ও তাদের জন্য উন্নত জীবনের ব্যবস্থা করার কথা বলে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অন্ধত্বকে কাজে লাগিয়ে ধর্মপ্রাণ ও সহজ-সরল মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিল। অথচ তারা দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য কোনো রকম সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করেনি। উল্টো তাদের নিম্নমানের খাবারসহ মানবেতর জীবন যাপনে বাধ্য করত। আসামিরা মাদ্রাসা ও এতিমখানা লিল্লাহ বোর্ডিং পরিচালনার জন্য প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের টাকা সংগ্রহে বাইরে যেতে এবং সন্ধ্যার আগে ফিরে পূর্বনির্ধারিত পরিমাণ টাকা জমা দিতে চাপ দিত। কেউ কোনো দিন নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ করতে না পারলে তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা হতো।