জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯–এ করে খাবার পেল সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চাটিবহর কোনাগাঁও গ্রামের ৩২টি বানভাসি পরিবার। খবর প্রথম আলোর।

গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় ৯৯৯ নম্বরে একটি কল আসে। এটি সংযুক্ত করে দেওয়া হয় সিলেট জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. লুৎফুর রহমানকে। অপর প্রান্ত থেকে এক নারীর শুধু কান্না শুনতে পাচ্ছিলেন পুলিশের এই কর্মকর্তা। কোনো রকমে ওই নারীর কাছ থেকে তিনি মুঠোফোন নম্বর চেয়ে নেন। পরে তিনি সমস্যার বিস্তারিত জানতে চান।

ওই নারী তখন পুলিশের কর্মকর্তাকে পরিচয় ও ঠিকানা দিয়ে বলেন, গত বুধবার থেকে বন্যা শুরু হলে পানি ক্রমাগত বাড়তে থাকে। এ অবস্থায় গত শুক্রবার থেকে তাঁদের গ্রামের ৩২টি পরিবার বন্যার পানিতে আটকে পড়েন। বাড়িঘর, রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে যায়। কূলকিনারা না পেয়ে গ্রামের পাশে থাকা বড় বড় কয়েকটি বালুবাহী স্টিলের নৌকায় আশ্রয় নেন। মোবাইল নেটওয়ার্কও অকার্যকর হয়ে পড়ে। এক সময় খাবারের মজুতও শেষ হয়ে যায়। এ অবস্থায় তাঁরা টানা তিন দিন ধরে অভুক্ত আছেন। তাঁদের জরুরি ভিত্তিতে খাবার প্রয়োজন।

৯৯৯-এ কল করা ওই নারীর নাম হনুফা বেগম (৪৫)। বাড়ি সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী দুর্গম চাটিবহর কোনাগাঁও গ্রামে। তাঁর স্বামী দিনমজুর রহমত আলী। হনুফার কলের পরপরই সিলেট জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. লুৎফুর রহমান কোম্পানীগঞ্জ থানাপুলিশকে ওই নারীসহ গ্রামটির ৩২ পরিবারের জন্য দ্রুত খাবার পাঠানোর নির্দেশ দেন। এরপর থানার উপপরিদর্শক মো. আজিজুর রহমান, গোপেশ দাশ ও জাহাঙ্গীর আলমসহ কয়েকজন খাবার নিয়ে গ্রামটির উদ্দেশে নৌকায় করে রওনা দেন। রাত ৮টার দিকে পুলিশের সদস্যরা গ্রামটিতে পৌঁছে অভুক্ত পরিবারগুলোর হাতে গুড়ো দুধ, চিড়া,বিস্কুট, খেজুরসহ নানারকম শুকনো খাবার তুলে দেন।

কোম্পানীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আজিজুর রহমান বলেন, গ্রামটি কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার অধীন হলেও এর অবস্থান সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায়। রাতের অন্ধকারে বন্যার পানি পাড়ি দিয়ে অভুক্ত পরিবারগুলোর কাছে খাবার পৌঁছে দিতে পেরে মনে একটা শান্তিভাব এসেছে।

সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. লুৎফুর রহমান বলেন, পুলিশ সদস্যরা এভাবে ভবিষ্যতেও মানুষের পাশে থেকে কাজ করতে চান।