কেরানীগঞ্জ মডেল থানার অভিযানে গ্রেপ্তার আসামি, উদ্ধার হওয়া মালপত্র ও আলামত। কোলাজ: পুলিশ নিউজ

ঢাকার কেরানীগঞ্জের জৈনপুরে র‌্যাব পরিচয়ে ডাকাতির ঘটনায় ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে কেরানীগঞ্জ মডেল থানা-পুলিশ।

আসামিদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে লুণ্ঠিত মালপত্র।

পুলিশ জানায়, ৪ সেপ্টেম্বর রাত ৮টা ৫৫ মিনিটে কেরানীগঞ্জ মডেল থানাধীন জৈনপুর বাজারের সুনীল মন্ডল তাঁর পায়েল জুয়েলার্স নামক জুয়েলারি দোকান বন্ধ করে স্বর্ণের ব্যাগ নিয়ে তাঁর বসতবাড়ির গেটের সামনে পৌঁছান। ওই সময় কলাতিয়াগামী রাস্তা থেকে সিলভার রঙের একটি মাইক্রোবাস হেডলাইট বন্ধ করে তাঁর দিকে আসতে থাকে। সুনীলের কাছাকাছি আসলে মাইক্রোবাসের হেডলাইট জ্বলে ওঠে।

মাইক্রোবাস থেকে অজ্ঞাতনামা দুই ডাকাত দ্রুতগতিতে নেমে র‌্যাবের লোক পরিচয় দিয়ে তাঁকে দাড়াতে বলেন। পরে তাঁকে মাইক্রোবাসে উঠতে বলেন। তাঁদের আচরণ সন্দেহজনক হওয়ায় সুনীল মন্ডল চিৎকার করলে অজ্ঞাতনামা দুই ডাকাত তাঁকে কিল-ঘুষি, লাথি মেরে তাঁর হাতে থাকা ব্যাগটি ছিনিয়ে নেন এবং তাঁকে গুরুতরভাবে আঘাতের ভয় দেখিয়ে মাইক্রোবাসে ওঠানোর জন্য টানাহেঁচড়া করতে থাকেন।

ওই সময় সুনীলের চিৎকারে স্ত্রী, শ্যালিকাসহ আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে ডাকাতেরা তাঁকে ছেড়ে দেন এবং মাইক্রোবাসটি নিয়ে দ্রুতগতিতে রামেরকান্দার দিকে চলে যান।

সুনীলের ব্যাগে থাকা ৩৪ ভরি বিভিন্ন ধরনের স্বর্ণালংকার (যার মূল্য আনুমানিক ৩৪ লাখ টাকা) ও ২২ ভরি রুপা (মূল্য আনুমানিক ২৮ হাজার ৬০০ টাকা) ও নগদ ৮০ হাজার টাকা, চেক বই ও বিভিন্ন হিসাবের রেজিস্টারসহ সর্বমোট ৩৫ লাখ ৮ হাজার ৬০০ টাকা ডাকাতি করে নিয়ে যায়।

এ বিষয়ে সুনীল মন্ডল বাদী হয়ে কেরাণীগঞ্জ মডেল থানায় ৫ সেপ্টেম্বর মামলা করেন।

সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার একটি চৌকস তদন্তদল ঘটনাস্থলের বিভিন্ন সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা এবং প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণের মাধ্যমে ডাকাতির ঘটনায় জড়িত সংঘবদ্ধ এই ডাকাত চক্রকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয়।

থানার চৌকস দল খিলগাঁও, কোতোয়ালিসহ ডিএমপির বিভিন্ন এলাকায় ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় বাদল মুন্সি ওরফে সার্জেন্ট বাদল (৪৫), শহিদুল শেখ ওরফে র‌্যাব শহিদ (৪০), অলিউর রহমান ওরফে ক্যাপ্টেন ওলি (৪২), সাইদ মনির আল মাহমুদ ওরফে সোর্স মনির (৩৭), সবুজ খাঁন (৫২), ড্রাইভার ইব্রাহিম ওরফে ডাক্তার (৩৬), লাবু শরীফ ওরফে বাবুল শরীফ ওরফে বাবলু (৪৮), মো. রুবেল (২৭) ও ড্রাইভার মোশারফ হোসেনকে (৩৯), গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তারকৃতদের হেফাজত থেকে ৩৪ ভরি ওজনের বিভিন্ন স্বর্ণালংকার, ২৯ ভরি ১৪ আনা স্বর্ণের গলিত পাত, ২২ ভরি চান্দি রুপা (ঝুড়ি রুপা), ২১ ভরি চান্দি রুপা (ঝুড়ি রুপা), নগদ দেড় লাখ টাকা, ‍দুটি হিসাব রেজিস্টার, দুটি হিসাব খাতা, একটি সিলভার রঙের নোয়াহ মাইক্রোবাস, একটি পার্ল রঙের এলিয়ন প্রাইভেট কার, ডাকাতদের ব্যবহৃত র‌্যাব লেখা তিনটি কটি, একটি হ্যান্ডকাফ, একটি লেজার লাইট, একটি খেলনা পিস্তল ও একটি ব্যাগ উদ্ধার করা হয়।