স্কুলছাত্রের হারানো সাইকেল উদ্ধারের পর হস্তান্তর করছেন শেরপুরের এসপি মো. কামরুজ্জামান। ছবি : কালবেলা

শেরপুরের গারো পাহাড়ের পাশে শ্রীবরদী এলাকায় গভীর রাতে অটোরিকশার চাকা অচল হয়ে যায়। আতঙ্কিত যাত্রীরা দিশেহারা হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে ফোন দেন ‘টক টু এসপি’ হটলাইনে। দ্রুত সময়ে পুলিশ তাঁদের উদ্ধার করে।

’টক টু এসপি’ হটলাইনে কাতার থেকে ফোন দেন জাহাঙ্গীর আলম জুয়েল। তিনি জানান, তাঁর বাসা শেরপুর শহরে, স্কুলছাত্র ছেলের বাইসাইকেল চুরি হয়েছে। ঘটনা জানার পর পুলিশ সঙ্গে সঙ্গেই সাইকেল উদ্ধারে তৎপরতা শুরু করে।

‘টক টু এসপি’ হটলাইনে শেরপুরের মানুষ এভাবেই দ্রুত পুলিশের সেবা পাচ্ছে। যেকোনো সমস্যায় ২৪ ঘণ্টা জেলা পুলিশ সুপারকে (এসপি) তাঁরা পাচ্ছেন ফোনে। গত মাসে শেরপুরের নতুন এসপি হিসেবে যোগ দিয়েছেন মো. কামরুজ্জামান। যোগ দিয়েই চালু করেছেন এই সেবা।

এই উদ্যোগ বেশ সাড়াও ফেলেছে জেলায়। ওই এলাকার প্রবাসীরা বিদেশ থেকে ফোন করে দেশে থাকা পরিবারের সদস্যদের প্রয়োজনে নিচ্ছেন পুলিশের সেবা।

শেরপুরের পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান বলেন, থানার ওসি থেকে শুরু করে এসপি পর্যন্ত সব কর্মকর্তার সরকারি মোবাইল ফোন রয়েছে। কিন্তু থানার কর্মকর্তারা অভিযানে থাকলে বা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সামনে থাকলে ফোনে ঠিকঠাক সাড়া দিতে পারেন না। এএসপি, অ্যাডিশনাল এসপি বা তিনি নিজেও নানা গুরুত্বপূর্ণ কাজে বা মিটিংয়ে থাকলে যথাসময়ে এলাকাবাসীর ফোন ধরতে পারেন না। এতে ‘পুলিশ ফোন ধরে না’ বলে মানুষের মধ্যে একটা নেতিবাচক ধারণার সৃষ্টি হতে পারে। তা দূর করতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

’টক টু এসপি‘ হটলাইনের কার্যক্রমের বিষয়ে পুলিশ সুপার বলেন, এসপি অফিসে দুই শিফটে ৬ জন পুলিশ সদস্য দুটি হটলাইন নম্বরে (০১৩২০১০৬২১৫ এবং ০১৩২০১০৬২১৫) সংযুক্ত থাকেন। কেউ কোনো বিষয়ে অভিযোগ দিলে বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বা অবনতির বিষয়ে জানালে কল সেন্টারে থাকা সংশ্লিষ্ট সদস্য তা পুলিশ সুপারকে সঙ্গে সঙ্গে অবহিত করেন। পুলিশ সুপার মিটিংয়ে বা ব্যস্ত থাকলে অন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে অবহিত করে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে থাকেন। এভাবে ২৪ ঘণ্টা জনগণ পুলিশ সুপারকে পেয়ে থাকেন।

শেরপুর জেলা পুলিশের অন্য এক কর্মকর্তা বলেন, অনেক সময়ে থানায় সেবা চেয়েও তা না পাওয়ার অভিযোগ থাকে। এই হটলাইনের মাধ্যমে যেকোনো বিষয় পুলিশ সুপারকে সহজে জানাতে পারেন। এই সেবাটা শুধু শেরপুর জেলাবাসীর জন্য।

’টক টু এসপি’ হটলাইনের কল সেন্টারে কর্মরত পুলিশের এক সদস্য জানান, তাঁরা দুই শিফটে ২৪ ঘণ্টা কল রিসিভ করতে প্রস্তুত থাকেন। এখন পর্যন্ত গড়ে প্রতিদিন চার থেকে পাঁচটি কল পেয়ে থাকেন তাঁরা। অনেকে মিসড কল দেন বা এই হটলাইন চালু রয়েছে কি না, এমন কারণেও ফোন দিয়ে থাকেন।

সূত্র : কালবেলা