নির্যাতনের শিকার বাবাকে দেখতে যান পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। ছবি : সংগৃহীত

বাবাকে (৭০) মারধরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। সেই ভিডিও নজরে আসে ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি), বাংলাদেশ ড. বেনজীর আহমেদ, বিপিএম (বার)-এর সহধর্মিণীর।

এরপর তিনি কুমিল্লা পুলিশ সুপার মো. ফারুক আহমেদকে বিষয়টি খোঁজ নিতে বলেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কুমিল্লা নগরীর ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের সুজানগর এলাকায় ১০ নভেম্বর সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটে। মূলত সম্পত্তির জন্য বৃদ্ধ বাবাকে মারধর করেন ছেলে।

এ ঘটনায় ছেলের নামে মামলা না করে উল্টো তাঁকে ছেড়ে দিতে পুলিশের কাছে অনুরোধ করেন তিনি।

স্থানীয়রা জানায়, সুজানগর এলাকার ব্যবসায়ী মো. মাহে আলমকে তাঁর ছোট ছেলে মো. রাসেল মিয়া সম্পত্তি লিখে দিতে দীর্ঘদিন ধরে চাপ দিয়ে আসছিলেন। ১০ নভেম্বর সন্ধ্যায় রাসেল তাঁর বাবা মাহে আলমকে চকবাজার মার্কেট ও বাড়ির জায়গা নিজ নামে লিখে দিতে বলেন। না দেওয়ায় বাবা মাহে আলমকে মারধর করতে থাকেন ছেলে। একপর্যায়ে মাহে আলমকে টেনেহিঁচড়ে খাটের ওপর ফেলে কিল-ঘুষি মারতে থাকেন।

স্থানীয়রা আরও জানায়, ঘটনাটি মাহে আলমের অন্য ছেলে-মেয়েরা ভিডিও করলেও বাবাকে রক্ষায় এগিয়ে আসেননি কেউ। পরে ছেলের হাতে নির্যাতনের ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।

এদিকে নির্যাতনের শিকার সেই বাবার জন্য উপহার পাঠান আইজিপির স্ত্রী।

গতকাল সন্ধ্যায় কুমিল্লা পুলিশ সুপার মো. ফারুক আহমেদ মাহে আলমকে দেখতে বাসায় যান। তাঁকে সান্ত্বনা দেন এবং আইজিপির স্ত্রীর দেওয়া উপহার তুলে দেন।

এ সময় মাহে আলমকে নির্যাতন করা ছেলে মো. রাসেল মিয়া উপস্থিত ছিলেন। পরে মাহে আলমের অনুরোধে মুচলেকা নিয়ে রাসেলকে বাবার হাতে তুলে দেয় পুলিশ।

ভুক্তভোগী মাহে আলম বলেন, ‘আমার অভিযোগ নাই এবং তাকে (ছেলেকে) মাফ করলাম। সে ভালো আছিল আগে, কখনো দুঃখ দেয়ার মতো কিছু করে নাই আগে। তাই তাকে মাফ করলাম।’

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সোহান সরকার, কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আনওয়ারুল আজিম।