কাভার্ড ভ্যানে লুট করা মালপত্র। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ।

২ জুলাই ঢাকার কেরানীগঞ্জের কলাতিয়ায় ফ্যাক্টরি লুটের ঘটনায় আট ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁদের কাছ থেকে লুট হওয়া মালপত্রসহ দুটি কাভার্ড ভ্যান জব্দ করা হয়েছে।

বুধবার (৫ জুলাই) রাতে এ তথ্য জানান ঢাকার কেরানীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহাবুদ্দিন কবীর।
তিনি জানান, ডাকাতির ঘটনায় লুট হওয়া সব মালপত্র উদ্ধারসহ দুটি কাভার্ড ভ্যান জব্দ করা হয়েছে।
২ জুলাই দিবাগত রাত ১২টা ৪০ মিনিটে একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্র কেরানীগঞ্জ মডেল থানাধীন কলাতিয়া নিশানবাড়ী এলাকায় অ্যাপিজ গ্লোবাল লিমিটেড নামক কারখানায় হানা দেয়। নিরাপত্তা প্রহরীরা কারখানার গেটে তালা লাগাতে গেলে ৪-৫ জন ডাকাত তাঁদের বাধা দেন এবং তাঁদের হাতে থাকা ছুরি দিয়ে নিরাপত্তা প্রহরীদের আঙুলে আঘাত করে কারখানার ভেতরে ঢোকেন। এরপর আরও ৯-১০ জন ডাকাত কারখানায় ঢুকে নিরাপত্তা প্রহরীসহ অন্যান্য স্টাফকে সিনথেটিক টেপ দিয়ে হাত-পা বেঁধে এলোপাতাড়ি কিলঘুষি মেরে শরীরের বিভিন্ন স্থান জখম করেন এবং কারখানার ম্যানেজার কোথায় আছেন, তা জানতে চাইলে একপর্যায়ে তাঁরা ডাকাতদের ভয়ে ম্যানেজারের রুম দেখিয়ে দেন। ডাকাতেরা তখন কারখানার ম্যানেজারকে বিবস্ত্র করে এলোপাতাড়ি মারধর করেন এবং হাত-পা বেঁধে খাটের ওপর ফেলে রাখেন। এরপর তাঁরা কারখানার ভেতরে থাকা কম্বল, কোটিং ফ্যাব্রিকস, রেইনকোট ফ্যাব্রিকস, মেস কাপড়সহ বিভিন্ন জিনিস লুট করেন।
লুট করা মালপত্রের আনুমানিক মূল্য ৮২ লাখ ৩৩ হাজার ৫০০ টাকা।
এ ঘটনায় কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় অজ্ঞাতনামা ১৪-১৫ জনের বিরুদ্ধে ডাকাতির মামলা হয়েছে।
আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করার জন্য ঢাকার পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান, পিপিএম (বার) পুলিশ তাৎক্ষণিক নির্দেশ দেন। এরই ধারাবাহিকতায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ক্রাইম অ্যান্ড অপস্ (দক্ষিণ) আমিনুল ইসলামের সার্বিক দিকনির্দেশনায় এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, (কেরানীগঞ্জ সার্কেল) শাহাবুদ্দিন কবীর, বিপিএম এর নেতৃত্বে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মামুন অর-রশিদসহ কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তার সমন্বয়ে গঠিত একটি বিশেষ তদন্ত টিম দুর্ধর্ষ এই ক্লুলেস ডাকাতির মূল রহস্য উদঘাটনের জন্য ব্যাপক তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেন। ঘটনাস্থল পরিদর্শন, সিসিটিভি পর্যালোচনা সর্বোপরি তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে আসামিদের শনাক্ত করতে সক্ষম হয়।
এরপর ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে ডাকাতির ঘটনায় জড়িত ৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন মো. ইস্রাফিল (৩০), মো. আমিরুল ইসলাম ওরফে রাজু (৪৫), মো. হামিদুল ইসলাম (৪০), মো. সজল মিয়া (৩০), মো. আজিজুল হক (৪৮), মো. জাহিদ মিয়া (৪০), মো. মনিরুল ইসলাম ওরফে রতন (৩২) ও মোসা. রাশেদা বেগম (৩৩)।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। তাঁদের কাছ থেকে কারখানার লুন্ঠিত সকল মালপত্র উদ্ধার করা হয়।
পলাতক অন্যান্য ডাকাত সদস্যকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।