কাবুলের এই আবাসিক হোটেলে বন্দুকধারীরা হামলা চালিয়েছে। ছবি: টুইটার।

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের একটি আবাসিক হোটেলে বন্দুকধারীরা হামলা চালিয়েছে। এতে অন্তত তিনজন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।

গতকাল সোমবার দুপুরের দিকে এ হামলা চালানো হয় বলে জানিয়েছে মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএন।

কাবুল পুলিশপ্রধানের মুখপাত্র খালিদ জাদরান বলেছেন, স্থানীয় সময় বেলা আড়াইটার দিকে কাবুলের বাণিজ্যিক এলাকা শের-ই-নাও এলাকার একটি হোটেলে এ হামলা হয়। সে সময় হোটেলটিতে অনেক বেসামরিক মানুষ ছিলেন।

হোটেলের কাছে থাকা একজন প্রত্যক্ষদর্শী সিএনএনকে বলেছেন, ‘বন্দুকধারীরা হোটেলটিতে অতর্কিত হামলা চালায়। এরপর বন্দুকযুদ্ধ শুরু হয়ে যায়।’

এদিকে তালেবান সরকারের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মোজাহিদ এক টুইটার পোস্টে বলেছেন, ‘ঘটনাস্থলে পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী পাঠানো হয়েছে। তারা হোটেলের অতিথিদের নিরাপদে সরিয়ে নিয়েছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক। তবে এ হামলায় তিনজন নিহত হয়েছেন।’

এ হামলায় কোনো বিদেশি নাগরিক নিহত হননি বলেও জানিয়েছেন জাবিউল্লাহ মোজাহিদ। তবে প্রাণভয়ে ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে দুই বিদেশি নাগরিক আহত হয়েছেন।

তবে নিহত তিনজনই হামলাকারী ছিলেন বলে দাবি করেছে তালেবান। কর্তৃপক্ষ বলেছে, তিন হামলাকারী তালেবান নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে গোলাগুলিতে নিহত হয়েছেন।

কাবুলের একজন সাংবাদিক ঘটনাটির একটি ভিডিও টুইটারে পোস্ট করেছেন। ভিডিওটি যাচাই করে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, হোটেলের একটি তলা থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখা গেছে। এ ছাড়া এক ব্যক্তিকে হোটেলের জানালা দিয়ে লাফ দিতে দেখা গেছে। তিনি সম্ভবত হামলা থেকে বাঁচতে জানালা দিয়ে লাফ দিয়েছিলেন।

তালেবান সূত্রের বরাত দিয়ে রয়টার্সের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, হোটেলটির নাম ‘লংগান হোটেল’। আবাসিক এ হোটেলে বেশির ভাগ চীনা ও অন্যান্য বিদেশি থাকেন।

একজন প্রত্যক্ষদর্শী টুইটারে বলেছেন, হামলার পর কাছের হাসপাতালে আহত অবস্থায় ২১ জনকে ভর্তি করা হয়েছে। এ ছাড়া হাসপাতালে যাওয়ার পথে আহত তিনজন মারা গেছেন।

মাত্র এক দিন আগেই চীনা রাষ্ট্রদূত নিরাপত্তা ইস্যু নিয়ে আফগান উপপররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে কথা বলেছেন। তিনি চীনা দূতাবাসের আরও সুরক্ষা দেওয়ার আহ্বান জানান তালেবান সরকারের কাছে। এরপরই এ হামলার ঘটনা ঘটল।

চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, হামলাটি একটি চীনা গেস্টহাউসের কাছে ঘটেছে এবং কাবুলে তাদের দূতাবাস পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।

গত কয়েক মাসে আফগানিস্তানে বেশ কিছু বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছে। এগুলোর মধ্যে এ মাসের শুরুতে পাকিস্তান দূতাবাসে হামলা এবং গত সেপ্টেম্বরে রুশ দূতাবাসে আত্মঘাতী হামলার ঘটনা রয়েছে। দুটি হামলারই দায় স্বীকার করেছে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট। সূত্র: আজকের পত্রিকা।