হাসান আজিজুল হক। ফাইল ছবি

একুশে পদকপ্রাপ্ত কথাসাহিত্যিক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের সাবেক অধ্যাপক হাসান আজিজুল হক ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর।

বাসস জানায়, হাসান আজিজুল হক ১৫ নভেম্বর (সোমবার) রাত সোয়া ৯টার দিকে রাজশাহীর বাসভবনে ইন্তেকাল করেন। তিনি এক ছেলে, এক মেয়েসহ অনেক গুণগাহী, আত্মীয়স্বজন ও ছাত্রছাত্রী রেখে গেছেন। তিনি বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন বলে পারিবারিক সূত্র জানায়।

হাসান আজিজুল হকের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১৫ নভেম্বর এক শোকবার্তায় তিনি বলেন, হাসান আজিজুল হক তাঁর সাহিত্যকর্ম ও সৃজনশীলতার জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

হাসান আজিজুল হক ১৯৩৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ভারতের বর্ধমান জেলার যবগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬০ সালে দর্শনে এমএ ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৭৩ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। ২০০৪ সালে তিনি অবসরে যান।

হাসান আজিজুল হক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনার পাশাপাশি লেখালেখি করে গেছেন। তিনি একাধারে গল্প, উপন্যাস ও প্রবন্ধ লিখেছেন। বাংলা সাহিত্যে অবদানের জন্য বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, একুশে পদক ও স্বাধীনতা পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।

হাসান আজিজুল হকের প্রথম গল্পগ্রন্থ ‘সমুদ্রের স্বপ্ন শীতের অরণ্য’–এর প্রথম গল্প ‘শকুন’। তাঁর লেখা ছোটগল্প ‘আত্মজা ও একটি করবী গাছ’ ব্যাপকভাবে পাঠক সমাদৃত। ‘আগুনপাখি’ নামে হাসান আজিজুল হকের একটি উপন্যাস প্রকাশিত হয় ২০০৬ সালে। তাঁর দ্বিতীয় উপন্যাস ‘সাবিত্রী উপাখ্যান’ ২০১৩ সালে প্রকাশিত হয়।

হাসান আজিজুল হকের লেখা গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে ‘তৃষ্ণা’, ‘উত্তরবসন্তে’, ‘বিমর্ষ রাত্রি, প্রথম প্রহর’, ‘পরবাসী’, ‘আমৃত্যু’, ‘আজীবন’, ‘জীবন ঘষে আগুন’, ‘খাঁচা’, ‘ভূষণের একদিন’, ‘ফেরা’, ‘মন তার শঙ্খিনী’, ‘মাটির তলার মাটি’, ‘শোণিত সেতু’, ‘ঘরগেরস্থি’, ‘সরল হিংসা’, ‘খনন’, ‘সমুখে শান্তির পারাবার’, ‘অচিন পাখি’, ‘মা-মেয়ের সংসার’, ‘বিধবাদের কথা’, ‘সারা দুপুর’ ও ‘কেউ আসেনি’।