বাংলাদেশ পুলিশের লোগো।

আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর নিরাপদ ও নির্বিঘ্নে উদযাপনের লক্ষ্যে দেশের নাগরিকদের বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ। বুধবার (৩ এপ্রিল) পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স থেকে এসব পরামর্শ দেওয়া হয়।

যাত্রীদের প্রতি অনুরোধ
পর্যাপ্ত সময় নিয়ে ঈদের ভ্রমণ পরিকল্পনা করুন। ভ্রমণকালে নিজের ও পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় রাখুন।
চালককে দ্রুতগতিতে গাড়ি চালাতে তাগিদ দেবেন না। ঝুঁকি নিয়ে অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে বাসের ছাদে কিংবা ট্রাক, পিকআপ ও অন্যান্য পণ্যবাহী যানবাহনে ভ্রমণ করবেন না।

রাস্তা পারাপারের ক্ষেত্রে জেব্রা ক্রসিং অথবা ফুটওভারব্রিজ ব্যবহার করুন। যেখানে জেব্রা ক্রসিং বা ফুটওভারব্রিজ নেই, সেখানে যানবাহনের গতিবিধি দেখে নিরাপদে রাস্তা পার হোন। প্রয়োজনে পুলিশের সহায়তা নিন।
ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে বেপরোয়া গতিতে চলাচল করবেন না। এতে জীবন বিপন্ন হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
অপরিচিত কোনো ব্যক্তির কাছ থেকে কোনো খাবার খাবেন না।

বাসমালিকদের প্রতি অনুরোধ
অদক্ষ, অপেশাদার, ক্লান্ত বা অসুস্থ চালককে যাত্রীবাহী বাস ও গাড়ি চালাতে দেবেন না। চালক যাতে নিয়ম মেনে গাড়ি চালায় এবং ঝুঁকিপূর্ণ ওভারটেকিং না করে, সে জন্য চালককে নির্দেশ দিতে হবে। বাসে অতিরিক্ত যাত্রী ওঠানো যাবে না। ফিটনেসবিহীন গাড়ি রাস্তায় বের করা যাবে না।

বাসচালকদের প্রতি অনুরোধ
অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালাবেন না, ঝুঁকিপূর্ণ ওভারটেকিং করবেন না। ক্লান্তি, অবসাদ বা অসুস্থ অবস্থায় গাড়ি চালাবেন না। ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ গাড়ির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সব সময় সঙ্গে রাখুন।
আঞ্চলিক সড়ক ও মহাসড়কে চলাচলের ক্ষেত্রে পুলিশের নির্দেশনা মেনে চলুন।

নৌযানের যাত্রীদের প্রতি অনুরোধ
ঝুঁকি নিয়ে অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে নৌযানে উঠবেন না। নৌযানের ছাদে যাত্রী হয়ে ভ্রমণ করবেন না। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে নৌযানে ভ্রমণ থেকে বিরত থাকুন।
যাত্রাপথে ঝড় দেখা দিলে ছোটাছুটি না করে নিজের জায়গায় অবস্থান করুন। স্পিডবোটে ভ্রমণের ক্ষেত্রে লাইফ জ্যাকেট পরুন।

নৌযানমালিকদের প্রতি অনুরোধ
নির্ধারিত সংখ্যক ও নির্ধারিত গ্রেডের মাস্টার ও ড্রাইভার দিয়ে নৌযান পরিচালনা করুন। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় নৌযান চলাচল বন্ধ রাখুন। নৌযানের মাস্টার ব্রিজে যাত্রীদের অবাধ চলাচল বন্ধের ব্যবস্থা করুন। লঞ্চে পর্যাপ্ত বয়া রাখুন।

নৌযানচালকদের প্রতি অনুরোধ

আবহাওয়ার পূর্বাভাস জেনে নৌযান নিয়ে বন্দর ছাড়ুন। ডেকের ওপর যাত্রীদের বসার স্থানে মালপত্র পরিবহন থেকে বিরত থাকুন। পর্যাপ্ত সংখ্যক বয়া, লাইফ জ্যাকেট নৌযানে রাখুন।
যাত্রাপথে ঝড়ের আশঙ্কা দেখা দিলে নৌযানকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিন বা তীরে ভিড়িয়ে রাখুন। নৌযানে মোবাইল ফোন ও রেডিও রাখুন এবং নিয়মিত আবহাওয়ার বুলেটিন শুনুন। প্রয়োজনে আবহাওয়াসংক্রান্ত অ্যাপ ব্যবহার করুন।
কাগজপত্রবিহীন নৌযান পরিচালনা থেকে বিরত থাকুন।
সব ফায়ার পাম্প ও অগ্নিনিরোধক যন্ত্রপাতির সহজলভ্যতা নিশ্চিত করুন। দুর্ঘটনাকবলিত নৌযান শনাক্তের লক্ষ্যে নৌযানে ১০০ থেকে ১৫০ ফুট লম্বা দড়িযুক্ত বয়া এবং লাইফ জ্যাকেট রাখুন।

ট্রেনযাত্রীদের প্রতি অনুরোধ

ট্রেনের ছাদে, বাফারে, পাদানিতে ও ইঞ্জিনে ঝুঁকিপূর্ণ ভ্রমণ থেকে বিরত থাকুন। ট্রেনে ভ্রমণের সময় পাথর নিক্ষেপ সম্পর্কে সতর্ক থাকুন। ট্রেনে ভ্রমণকালে মালপত্র নিজ দায়িত্বে রাখুন। বিনা টিকিটে ট্রেনে ভ্রমণ থেকে বিরত থাকুন।
গুজবে বিভ্রান্ত হবেন না। যেকোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে পুলিশকে অবহিত করুন। জরুরি প্রয়োজনে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করুন।

প্রয়োজনে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের কন্ট্রোল রুম (০১৩২০০০১২৯৯), হাইওয়ে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স (০১৩২০১৮২৫৯৮), রেলওয়ে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স (০১৩২০১৭৭৫৯৮), নৌ পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স (০১৩২০১৬৯৫৯৮), র‍্যাবের (০১৭৭৭৭২০১৯৯) নম্বরে এবং জেলা পুলিশ সুপার ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের (ওসি) সঙ্গে যোগাযোগ করুন।