রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনাল ও গরুর হাট পরিদর্শন শেষে বক্তব্য দিচ্ছেন ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি), বাংলাদেশ চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বিপিএম (বার), পিপিএম। ছবি : বাংলাদেশ পুলিশ

ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি), বাংলাদেশ চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বিপিএম (বার), পিপিএম বলেছেন, যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রেখে ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

গাবতলী গরুর হাট পরিদর্শন করছেন ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি), বাংলাদেশ চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বিপিএম (বার), পিপিএম। ছবি : বাংলাদেশ পুলিশ

তিনি বলেন, কেউ কোরবানির পশুর হাটে জাল টাকা ছড়িয়ে প্রতারণার চেষ্টা করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জাল টাকার কারবারিদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ছিনতাইকারী, অজ্ঞান পার্টি, মলম পার্টির বিরুদ্ধেও আমরা অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি।

সোমবার (২৬ জুন) দুপুরে রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনাল ও গরুর হাট পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

গাবতলী বাস টার্মিনালে যাত্রীদের মাঝে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করছেন ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি), বাংলাদেশ চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বিপিএম (বার), পিপিএম। ছবি : বাংলাদেশ পুলিশ

এর আগে আইজিপি গাবতলী বাস টার্মিনালে যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং কোরবানির পশুর হাটের নিরাপত্তা সম্পর্কে বেপারীদের কাছ থেকে খোঁজখবর নেন। একই সঙ্গে যাত্রীদের মাঝে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করেন তিনি।

আইজিপি বলেন, এবারের ঈদে মানুষের ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করার লক্ষ্যে মেট্রোপলিটন পুলিশ, জেলা পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ, নৌ পুলিশ, ট্যুরিস্ট পুলিশ, এপিবিএন, র‍্যাব, পুলিশের বিশেষায়িত অন্যান্য ইউনিট একযোগে কাজ করছে। আমাদের সঙ্গে প্রশাসন, পরিবহন মালিক-শ্রমিকও কাজ করছেন। মানুষকে নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছাতে আমরা সবাই মিলে নিরলস প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।

গাবতলী বাস টার্মিনালে এক যাত্রীর সঙ্গে কথা বলছেন ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি), বাংলাদেশ চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বিপিএম (বার), পিপিএম। ছবি : বাংলাদেশ পুলিশ

পুলিশপ্রধান বলেন, সরকার রাস্তাঘাটের ব্যাপক উন্নয়ন করেছে। দেশে যোগাযোগব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন হয়েছে। আমাদের গর্বের পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। ফলে মানুষ স্বস্তিতে গন্তব্যে পৌঁছতে পারছেন।

তিনি বলেন, আমরা যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রেখে ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। আমাদের সিনিয়র অফিসাররাও ২৪ ঘণ্টা রাস্তায় থেকে দায়িত্ব পালন করছেন। আমরা সব সময় জনগণের পাশে থেকে তাঁদের সেবা দিতে চাই। যেকোনো প্রয়োজনে নিকটস্থ থানা অথবা ৯৯৯ নম্বরে যোগাযোগ করার জন্য যাত্রীদের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।

সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল পরিদর্শন শেষে বক্তব্য দিচ্ছেন ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি), বাংলাদেশ চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বিপিএম (বার), পিপিএম। ছবি : বাংলাদেশ পুলিশ

আইজিপি বলেন, হাইওয়েতে ফিটনেসবিহীন ও মেয়াদোত্তীর্ণ গাড়ি চলাচল করতে পারবে না। যাত্রীদের অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, কেউ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পণ্যবাহী গাড়ি অথবা খোলা ট্রাকে ভ্রমণ করবেন না।

পশুবাহী পরিবহনের সামনে গন্তব্য স্থান অথবা পশুর হাটের নাম লিখে ব্যানার টানিয়ে রাখতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি তিনি অনুরোধ জানান।

পুলিশপ্রধান বলেন, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় গত ঈদুল ফিতরের ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক ছিল, জনগণ স্বচ্ছন্দে গন্তব্যে পৌঁছাতে পেরেছেন। গতবারের অভিজ্ঞতার আলোকে আমরা এবারও আমাদের নিরাপত্তা পরিকল্পনা সাজিয়েছি। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা এবারও একটি সুন্দর ঈদ উপহার দিতে সক্ষম হব।

ঈদের ছুটিতে অনেকে শহর ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে যাবেন উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, পর্যটনকেন্দ্রে জনসমাগম ঘটবে। আমরা সব বিষয় মাথায় রেখে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তায় পুলিশকে সার্বিক নির্দেশনা দিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, ঈদের ছুটিতে ফাঁকা বাড়ি পাহারায় পরিচিত ও বিশ্বস্ত ব্যক্তিকে নিয়োজিত করুন। ঈদে যাঁরা শহর ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে যাবেন, তাঁরা নিজেদের মূল্যবান সামগ্রী নিরাপদে রাখবেন।

সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে যাত্রীদের মাঝে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করছেন ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি), বাংলাদেশ চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বিপিএম (বার), পিপিএম। ছবি : বাংলাদেশ পুলিশ

এ সময় ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ড. খ. মহিদ উদ্দিন, সিটিটিসির প্রধান মো. আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মো. হারুন অর রশিদ এবং অন্যান্য কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।

পরে আইজিপি সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল পরিদর্শন করেন। তিনি লঞ্চমালিক, চালক ও যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং সার্বিক নিরাপত্তাব্যবস্থা সম্পর্কে খোঁজখবর নেন।

ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক, নৌ পুলিশের ডিআইজি মো. মিজানুর রহমান এবং ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাবৃন্দ ওই সময় আইজিপির সঙ্গে ছিলেন।

সবশেষে আইজিপি কমলাপুর রেলস্টেশন পরিদর্শন করেন। তিনি যাত্রীদের খোঁজখবর নেন এবং রেলওয়ে স্টেশনের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করেন।

এ সময় ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক, অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন) মো. কামরুল আহসান, রেলওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি মো. দিদার আহম্মদ, বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. কামরুল আহসান এবং ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাবৃন্দ আইজিপির সঙ্গে ছিলেন।