প্রতীকী ছবি

ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ফেয়ার মার্ট লিমিটেডের ওয়েবসাইট হ্যাক করে অনলাইন অর্ডারের শিপমেন্ট জালিয়াতির মাধ্যমে পণ্য আত্মসাৎকারী হ্যাকার গ্রুপের হোতাসহ তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা (ডিবি) সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ।

ডিএমপি জানায়, গত বুধবার (৬ জুলাই) ঢাকা ও চাঁদপুরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়।

আসামিরা হলেন মো. শহিদুজ্জামান ওরফে রনি, মো. মাজহার ইসলাম ওরফে রুবেল ওরফে রুমেল ও মো. আমিন আজাদ।

গোয়েন্দা সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের অর্গানাইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিমের অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. নাজমুল হক বলেন, অজ্ঞাতপরিচয় হ্যাকার গ্রুপের সদস্যরা ফেয়ার মার্ট লিমিটেডের ওয়েবসাইট হ্যাক করে অ্যাডমিন প্যানেলে প্রবেশ করেন। তাঁরা অনলাইন অর্ডারের বিভিন্ন তথ্য (শিপিং এড্রেস, মোবাইল নম্বর, পেমেন্ট স্ট্যাটাস) জালিয়াতির মাধ্যমে পরিবর্তন করে ব্র‍্যান্ডের মোবাইল ফোন, টেলিভিশন, রেফ্রিজারেটরসহ বিভিন্ন পণ্য নিজেদের ঠিকানায় গ্রহণ করে আত্মসাৎ করেন। পণ্য ডেলিভারি হওয়ার পর তাঁরা প্রতিষ্ঠানের পোর্টালে প্রবেশ করে গ্রাহকের পরিবর্তিত তথ্য পুনরায় হালনাগাদ করেন। ফলে প্রকৃত গ্রাহক পণ্য পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়। গ্রাহকরা অর্ডার করা পণ্য না পেয়েও ডেলিভারি সার্ভিসের (পেপার ফ্লাই ও ই-কুরিয়ার) ক্ষুদে বার্তা পান। এ ঘটনায় ফেয়ার মার্ট লিমিটেডের কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফেরদৌস গত মঙ্গলবার (৫ জুলাই) বনানী থানায় মামলা করেন। মামলাটির ছায়া তদন্ত শুরু করে গোয়েন্দা সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের অর্গানাইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম।

তিনি আরও বলেন, মামলাটি তদন্তকালে গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় হ্যাকার গ্রুপের সদস্যদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে হ্যাকিংয়ের কাজে ব্যবহৃত একটি কম্পিউটার, সাতটি মোবাইল ফোন, ২৯টি ভুয়া নিবন্ধিত সিম কার্ড এবং আত্মসাৎ করা একটি রেফ্রিজারেটর, একটি টিভি এবং তিনটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে ম্যালওয়্যার ইনজেক্ট করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট হ্যাক করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিলেন তাঁরা। এই গ্রুপের হোতা শহিদুজ্জামান এবং সদস্য মাজহার বিভিন্ন আন্তর্জাতিক হ্যাকার গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত হয়ে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট এবং বিভিন্ন ব্যক্তির ই-মেইল আইডি হ্যাক করতেন। আসামি আমিন ভুয়া নিবন্ধিত সিম কার্ড সরবরাহ ও আত্মসাৎ করা পণ্য বিক্রি করতেন।

আসামিদের আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চাইলে এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয় বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

*হ্যাকিং থেকে নিরাপদ থাকতে পুলিশের পরামর্শ :*

১. ক্র্যাক সফটওয়্যার ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে।

২. বিভিন্ন ওয়েবসাইটে আলাদা আলাদা পাসওয়ার্ড ব্যবহার করতে হবে।

৩. সাইবার ক্যাফে বা অন্য কারো কম্পিউটারে নিজের পাসওয়ার্ড ব্যবহারের ক্ষেত্রে পাসওয়ার্ড সংরক্ষণ হচ্ছে কি না, খেয়াল রাখতে হবে।

৪. অপরিচিত লিংকে ক্লিক করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

৫. নিয়মিত পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করতে হবে।

৬. শক্তিশালী ফায়ারওয়াল ব্যবহার করতে হবে।