রাশিয়া জানিয়েছে, তাদের ১০ হাজারের বেশি সেনা ইউক্রেনের কাছে মাসব্যাপী মহড়া শেষ করেছে। মস্কো তার সাবেক সোভিয়েত প্রতিবেশী ইউক্রেনে আক্রমণের পরিকল্পনা করছে- এমন অভিযোগের মধ্যে রাশিয়া গত শনিবার এ কথা জানিয়েছে।

২০১৪ সালে ইউক্রেনের কাছ থেকে ক্রিমিয়া দখল করে নেয় রাশিয়া। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, তাদের সাউদার্ন মিলিটারি ডিস্ট্রিক্ট ফোর্সের ওই মহড়া দক্ষিণাঞ্চলে রোস্তভ, ক্রাসনোদর, ক্রিমিয়াসহ দক্ষিণাঞ্চলের একটি অংশে অনুষ্ঠিত হয়। মহড়াগুলো আরও দূরে স্টাভ্রোপল, আস্ট্রাখান, উত্তর ককেশাস প্রজাতন্ত্র, এমনকি রাশিয়ার ককেশাস অঞ্চলের মিত্র আর্মেনিয়াতেও অনুষ্ঠিত হয়।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, মহড়া শেষে সেনারা তাদের স্থায়ী ঘাঁটিতে ফিরে যাচ্ছে। খবর এএফপির।

পশ্চিমা দেশগুলো অভিযোগ করেছে, তারা সম্ভাব্য শীতকালে আক্রমণের আগে ইউক্রেনের কাছে এক লাখ সেনা মোতায়েন করেছে।

ইউক্রেনের ধারণা অনুযায়ী, দেশটির সীমান্তে রাশিয়ার সেনা সংখ্যা অক্টোবরে ছিল প্রায় ৯৩ হাজার। এখন সেখান থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৪ হাজারে।

ইউক্রেনে বড় ধরনের হামলার পরিকল্পনার অভিযোগ অস্বীকার করে রাশিয়া বলেছে, তাদের অঞ্চলের মধ্যে তাদের বাহিনী যেখানে খুশি যেতে পারে।

রাশিয়া পশ্চিমের কাছে নিরাপত্তার দাবি জানিয়ে বলেছে, ন্যাটোর উচিত নয় ইউক্রেনকে তাদের সদস্য করা। তারা সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রগুলোতে নতুন ঘাঁটি স্থাপনে যুক্তরাষ্ট্রকে বাধা দিতে চায়।
গত বুধবার ইউক্রেন সীমান্তে সেনা জড়ো করা নিয়ে উত্তেজনার চরম আকার ধারণ করেছিল। তখন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছিলেন, পশ্চিমের ‘আক্রমণাত্মক অবস্থান’-এর প্রতিক্রিয়া হিসেবে রাশিয়া ‘উপযুক্ত প্রতিশোধমূলক’ সামরিক পদক্ষেপ নেবে।

কিন্তু পরের দিন পুতিন সুর নরম করে বলেন, তিনি রাশিয়ার নিরাপত্তা প্রস্তাবের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ‘ইতিবাচক’ প্রতিক্রিয়া দেখেছেন। পাশাপাশি তিনি বলেন, আগামী মাসে আলোচনা হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ওয়াশিংটন দ্বিপক্ষীয়ভাবে এবং ‘মাল্টিপল চ্যানেল’ উভয় ক্ষেত্রেই ‘জানুয়ারির প্রথম দিকে কূটনৈতিক সমাধানে যুক্ত হতে প্রস্তুত’।

গত শনিবার জার্মানির একজন কর্মকর্তা বলেন, মস্কো ও বার্লিন ‘জানুয়ারির শুরুতে’ একটি বৈঠকে সম্মত হয়েছে।

শুক্রবার এক সাক্ষাৎকারে ইউক্রেনের একজন ঊর্ধ্বতন নিরাপত্তা কর্মকর্তা এএফপিকে বলেন, শিগগিরই রাশিয়ার আক্রমণের কোনো ঝুঁকি নেই।
২০১৪ সালে মস্কো ক্রিমিয়া দখল করার পরপরই রাশিয়াপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে লড়াই করছে ইউক্রেন। ওই সংঘর্ষে ১৩ হাজারের বেশি প্রাণ হারায়।

পশ্চিমারা দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছে, ক্রেমলিন পূর্ব ইউক্রেনে রাশিয়াপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সরাসরি সামরিক সহায়তা দিয়ে আসছে। তবে রাশিয়া রাশিয়া এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।