অ্যামাজনের নামে চীন থেকে বাংলাদেশে প্রতারণার ঘটনায় প্রতারক চক্রের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া সামগ্রী। ছবি: ডিএমপি নিউজ

নামী কোম্পানির নামের খুব কাছাকাছি নাম দিয়ে ডোমেইন কিনত একটি প্রতারক চক্র। পরে সামাজিক যোগাযোগের সবগুলো মাধ্যমে তারা লোভনীয় বিজ্ঞাপন দিত। কম সময় কাজ করে বেশি উপার্জন, পার্টটাইম কাজের মতে চটকদার কথা বলে মানুষের আকর্ষণ বাড়াত। প্রথম দিকে কম টাকা বিনিয়োগে বেশি লভ্যাংশ প্রদান করত। বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের জন্য গ্রাহকদের সঙ্গে সঙ্গে লভ্যাংশ দিত। এতে করে মানুষ বিশ্বাস করে আরও বেশি বিনিয়োগ করত। আর সমস্যার সূত্রপাতই হতো বেশি বিনিয়োগ করলে।

বিনিয়োগ বেশি হলে প্রতারকেরা গ্রাহকদের আরও বেশি বিনিয়োগের শর্ত দিত। শর্ত না মানলে মূলধন বা মুনাফা কিছুই ফেরত মিলত না। গ্রাহকের বিনিয়োগ করা পুরো টাকাই আত্মসাৎ করে নিত প্রতারকেরা। এভাবে হাজার হাজার গ্রাহকের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে পুরো টাকাই চীনে পাচার করা হতো।

প্রতারিত এক ভুক্তভোগী গ্রাহকের অভিযোগের ভিত্তিতে রমনা মডেল থানার করা মামলায় এই চক্রের দেশি-বিদেশি চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের ডিবি সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ (দক্ষিণ)। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে দুজন চীন ও দুজন বাংলাদেশি নাগরিক।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন ঝ্যাং পিং ও ঝ্যাং ইরউয়া, সিয়াম চৌধুরী ও আবীর হোসেন। গ্রেপ্তারের সময় তাঁদের কাছ থেকে ২০টি মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, বিকাশ, নগদ অ্যাকাউন্টসহ ৩ হাজারটি বিভিন্ন কোম্পানির মোবাইল সিম, রাউটার ও দুটি পাসপোর্ট উদ্ধার করা হয়।

ডিবি সাইবার সূত্র জানায়, চক্রটি ডিজিটাল মাধ্যমে দুনিয়ার বিখ্যাত ও নামী ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের নাম ও ছবি ব্যবহার করে চাকরিতে নিয়োগ ও ১৫ থেকে ২০ মিনিট কাজ করে হাজার হাজার টাকা উপার্জন করা যায় বলে বিজ্ঞাপন দিত। এই চক্রের হোতা ডেং শোয়াইমিং চীনে বসে আমেরিকাভিত্তিক মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি অ্যামাজনের নামের কাছাকাছি নামের ডোমেইন কিনে চক্রের বাংলাদেশি সদস্যদের সহযোগিতায় অ্যাড বুস্টিং করে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, টুইটার, টেলিগ্রামসহ বিভিন্ন জায়গায় বিজ্ঞাপন দেয়। অ্যামাজন কোম্পানির নামেই তারা বিজ্ঞাপন দিয়ে লোভনীয় প্রস্তাব দিত। সাধারণ মানুষ চাকরি ও টাকা উপার্জনের জন্য তাদেরকে বিশ্বাস করে ডিজিটাল মাধ্যমের বিভিন্ন চ্যানেলে ও লিংকে যুক্ত হয়। এই ডিজিটাল সিস্টেমটি চীন থেকে পরিচালিত হয়। বিকাশ, নগদ ও ব্যাংকের লেনদেনের জন্য ১০ থেকে ১৫ শতাংশ কমিশনের এবং অন্য লেনদেনের জন্য আরও বেশি লাভের প্রলোভন দেখাত।