‘অচলায়তনের অপ্সরী’ নাটকের একটি দৃশ্য। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

বাংলাদেশ পুলিশ থিয়েটারের প্রযোজনায় ‘অচলায়তনের অপ্সরী’ নাটকের সপ্তম মঞ্চায়ন হবে বৃহস্পতিবার।

গতকাল সোমবার বাংলাদেশ পুলিশ থিয়েটার অ্যান্ড কালচারাল ক্লাবের পুলিশ পরিদর্শক মো. জাহিদুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।

বার্তায় বলা হয়, আগামী বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল ২০২৪ খ্রি.) সন্ধ্যা ০৭:০০ ঘটিকায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মূল মিলনায়তনে “অচলায়তনের অপ্সরী” নাটকটির ৭ম মঞ্চায়ন অনুষ্ঠিত হবে।
বার্তায় আরও বলা হয়, ‘খ্রিষ্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দীতে এথেন্সের আইনপ্রণেতা মি. সোলেন সর্বপ্রথম পতিতাবৃত্তিকে আইনি বৈধতা দিয়েছিলেন। তারপর থেকে দেশে দেশে বৈধতা পেতে থাকে সামাজিকভাবে ঘৃণিত পেশাটি। আমাদের উপমহাদেশেও মুঘল, ফিরিঙ্গিরা এসে তাদের সৈন্যদের মনোরঞ্জনের জন্য পতিতালয় স্থাপন করে। জোরপূর্বক এই পেশায় নিয়োজিত করা হয় ভারতীয় নারীদের। সেই ধারাবাহিকতারই অংশ দৌলতদিয়া পতিতাপল্লি।’

এতে আরও বলা হয়, “এখানে বিক্রি হওয়া এক তরুণী নিজেকে বাঁচাতে গিয়ে উপলব্ধি করে, প্রভাবশালীদের দ্বারা তৈরি এটি একটি শক্ত অচলায়তন। উপলব্ধি করে কোনো স্বাধীনতা কোনো মানবাধিকার নেই এখানকার বাসিন্দাদের। এমনকি এদের সন্তানরাও এই অচলায়তনে বন্দি। তাদের কন্যাসন্তানরা বাধ্য হন মায়ের পেশা গ্রহণ করতে। এরই মধ্যে দেখা পায় একজন পুলিশ অফিসারের, যিনি এগিয়ে আসেন এদের মানবাধিকার রক্ষায়। প্রচেষ্টা চালান তাঁদের সন্তানদের সমাজের মূলধারায় নিয়ে আসতে। উদ্যোগ গ্রহণ করেন মৃত্যুর পর এখানকার মেয়েদের লাশ দাফন-কাফনের ব্যবস্থা করার। যে লাশগুলো পূর্বে ভাসিয়ে দেওয়া হতো নদীর পানিতে, পতিতাপল্লীর নাম বদলে করে দেন ‘দৌলতদিয়া বাজার পূর্বপাড়া’।ওই পুলিশ অফিসারকে সহায়তা করত মেয়েটি। এ কারণেই প্রভাবশালীদের রোষানলে পড়ে সে। খুনের অভিযোগে ফাঁসিয়ে দেওয়া হয় তাকে।”

দৌলতদিয়া যৌনপল্লিকে উপজীব্য করে সত্যাশ্রয়ী, গবেষণালব্ধ ‘অচলায়তনের অপ্সরী’ নাটকটির কাহিনি এভাবেই গড়ে উঠেছে। সেখানে আরও দেখা যায়, সামাজিকভাবে একঘরে হয়ে থাকলেও তাদের মধ্যেও রয়েছে কমিউনিটি বন্ধন। তাদেরও নাড়া দেয় মাতৃস্নেহ, তাদের মধ্যেও জাগে প্রেম। তাদের মধ্যেও রয়েছে শ্রেণিচেতনা। তারাও চায় সমাজের মূলধারায় ফিরে আসতে।