প্রধান অতিথি হিসেবে টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন স্পেশাল ব্রাঞ্চের অতিরিক্ত আইজিপি (গ্রেড-১) মো. মনিরুল ইসলাম বিপিএম (বার), পিপিএম (বার)। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

পুলিশ বাহিনীর মধ্যে ভালো কাবাডি খেলোয়াড় তৈরির লক্ষ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো ‘বাংলাদেশ পুলিশ কাবাডি চ্যাম্পিয়নশিপ ২০২৩’। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) বনাম নড়াইল জেলা পুলিশের নারী কাবাডি দলের ম্যাচ দিয়ে শুরু হয় এই চ্যাম্পিয়নশিপের যাত্রা। খবর ডিএমপি নিউজের।

এতে মোট ১৪টি পুরুষ দল অংশগ্রহণ করছে। গ্রুপ পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত এই টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণকারী পুরুষ দলগুলো হলো—ডিএমপি, আরএমপি, কেএমপি, সিএমপি, নেত্রকোনা জেলা, নারায়ণগঞ্জ জেলা, হবিগঞ্জ জেলা, ৪ এপিবিএন বগুড়া, আরআরএফ খুলনা, বান্দরবান জেলা, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ-৪ নারায়ণগঞ্জ, রাজশাহী জেলা, ট্যুরিস্ট পুলিশ ঢাকা ও আরআরএফ বরিশাল।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্য দিচ্ছেন ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি সৈয়দ নুরুল ইসলাম বিপিএম (বার), পিপিএম। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

এ ছাড়া কাবাডি চ্যাম্পিয়নশিপে ৪টি নারী দল অংশগ্রহণ করেছে। এটিও গ্রুপ পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হবে। নারী দলে অংশগ্রহণ করেছে ডিএমপি, ঢাকা জেলা, ১১ এপিবিএন উত্তরা ঢাকা ও নড়াইল জেলা।

বৃহস্পতিবার (১ জুন) বিকেলে গুলিস্তানে বাংলাদেশ কাবাডি স্টেডিয়ামে শুরু হওয়া এই টুর্নামেন্ট প্রধান অতিথি হিসেবে উদ্বোধন করেন স্পেশাল ব্রাঞ্চের অতিরিক্ত আইজিপি (গ্রেড-১) ও বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. মনিরুল ইসলাম বিপিএম (বার), পিপিএম (বার)। সভাপতিত্ব করেন ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি ও বাংলাদেশ পুলিশ কাবাডি চ্যাম্পিয়নশিপ-২০২৩ টুর্নামেন্ট পরিচালনা কমিটির সভাপতি সৈয়দ নুরুল ইসলাম বিপিএম (বার), পিপিএম। এ সময় পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

খেলায় অংশগ্রহণকারী সব দলকে স্বাগত জানিয়ে প্রধান অতিথি মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসেবে জনগণের জানমাল রক্ষার পাশাপাশি রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা রক্ষার কাজে নিয়োজিত থাকে। এই কাজের বাইরে শারীরিক সুস্থতা ও শরীরচর্চার অংশ হিসেবে খেলোয়াড়সুলভ মানসিকতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকেন। এটি আমাদের ছাত্রজীবনের এক্সট্রা কারিকুলামের মতোই।

বক্তব্য দিচ্ছেন বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. মনিরুল ইসলাম বিপিএম (বার), পিপিএম (বার)। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

তিনি বলেন, বাংলাদেশ পুলিশে খেলাধুলার অনেকগুলো টিম রয়েছে। এগুলোর মাধ্যমে দেশে-বিদেশে সবচেয়ে বেশি সম্মান অর্জন করছে বাংলাদেশ পুলিশ কাবাডি টিম। শৈশবের হাডুডু বা আজকের কাবাডি একেবারেই আমাদের নিজস্ব খেলা, দেশীয় খেলা। বাঙালির ঐতিহ্যবাহী খেলাটি প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল। কয়েক বছর ধরে এর যেমন পুনর্জীবন ঘটেছে, তার পেছনে বাংলাদেশ পুলিশ কাবাডি দলেরও ভূমিকা রয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশ কাবাডি খেলাকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়ার প্রয়াস নিয়ে এগিয়ে চলছে।

তিনি আরও বলেন, খেলাধুলায় জয়-পরাজয় থাকবেই, এটা খেলাধুলার একটা অংশ। আজ থেকে শুরু হওয়া এ খেলায় যাঁরা বিজয়ী হবেন না, তাঁরা আগামীতে যেন চ্যাম্পিয়ন হতে পারেন, সেই প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবেন। আমাদের ওপর যে গুরুদায়িত্ব রয়েছে, তা পালনের পাশাপাশি কাবাডি খেলাকেও জাতীয় এবং ক্ষেত্রবিশেষে আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট হবে, সেখানে অংশগ্রহণ করতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি সৈয়দ নুরুল ইসলাম বিপিএম (বার), পিপিএম বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ একটি গৌরবময় ঐতিহ্যের নাম। যার জন্ম এই স্বাধীন জন্মভূমিতে রক্তদানের মধ্য দিয়ে। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে রাজারবাগে শুরু হয় প্রথম প্রতিরোধ যুদ্ধ। এই প্রতিরোধ যুদ্ধ শুরু করেন বাংলাদেশ পুলিশের অকুতোভয় সদস্যরা যাঁরা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে বঙ্গজননীকে স্বাধীন করেছেন। আমরা তাঁদেরই উত্তরসূরি।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ পুলিশের কাবাডি চ্যাম্পিয়নশিপ টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করবে বাংলাদেশ পুলিশের ১৪টি পুরুষ ও নারীদের ৪টি দল। কাবাডি একটি অত্যন্ত আনন্দঘন ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ খেলা। এ খেলা স্বল্প খেলোয়াড়ের সমন্বয়ে খুব কম সময়ে সম্পন্ন হয়ে থাকে। কাবাডি আমাদের জাতীয় খেলা। গ্রামগঞ্জের যেকোনো জায়গায় এ খেলা দেখা যায়।

উদ্বোধনী খেলায় নড়াইল জেলা পুলিশের নারী কাবাডি দল ৪২-২৩ পয়েন্টে ডিএমপির নারী কাবাডি দলকে পরাজিত করে। দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে ডিএমপির পুরুষ কাবাডি দল ৫৬-২২ পয়েন্টে নেত্রকোনা জেলা পুরুষ কাবাডি দলকে পরাজিত করে।

কাবাডি চ্যাম্পিয়নশিপে ৪টি নারী দল অংশগ্রহণ করেছে। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

অপর এক ম্যাচে ৪ এপিবিএন বগুড়ার পুরুষ কাবাডি দল ৫৬-২২ পয়েন্টে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের পুরুষ কাবাডি দলকে পরাজিত করে।
টুর্নামেন্টের চূড়ান্ত প্রতিযোগিতা গুলিস্তানে বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশন মাঠে অনুষ্ঠিত হবে। অন্য সব ম্যাচ মিরপুর পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট (পিওএম) পুলিশ লাইনস কাবাডি মাঠে অনুষ্ঠিত হবে।

আগামী ৬ জুন কোয়ার্টার ফাইনাল ও ৭ জুন সেমিফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশ পুলিশ কাবাডি চ্যাম্পিয়নশিপ প্রতিযোগিতায় গ্রুপের সর্বোচ্চ পয়েন্ট অর্জনকারী দুটি দল চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে পর্দা নামবে টুর্নামেন্টের। ফাইনাল খেলার তারিখ ও সময় পরে জানানো হবে।