বগুড়ায় ডিবির অভিযানে গ্রেপ্তার দুই আসামি। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

লিবিয়ায় দুই প্রবাসীকে অপহরণের পর বাংলাদেশে তাঁদের পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টার সময় জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অভিযানে অপহরণ চক্রের দুই সদস্য গ্রেপ্তার হয়েছেন। এ সময় দুই ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার দুজন হলেন মো. পান্নু মিয়া (৩৫) ও মো. শিপলু সরকার (৪০)। ১ জুলাই (সোমবার) তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
জেলা পুলিশ জানায়, দুপচাঁচিয়া থানায় রাব্বি খন্দকার নামের এক ব্যক্তির লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে চক্রের ওই দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগে বলা হয়, পাপ্পু খন্দকার (২৭) ও সাঈদ খন্দকার (২৪) রাব্বি খন্দকারের ছোট ভাই। তাঁদের বিদেশে পাঠানোর জন্য চেষ্টাকালে তাঁর দূরসম্পর্কের আত্মীয় উজ্জল তাঁকে জানান, সাব্বির হোসেন লিবিয়ায় আছেন। তাঁর মাধ্যমে পাপ্পু ও সাঈদকে বিদেশে নিয়ে ভালো বেতনে চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দেন উজ্জল।
পরে উজ্জলের কথামতো তাঁর দুই ভাইকে বিদেশ পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন রাব্বি। এরপর উজ্জল জানান, দুই ভাইকে লিবিয়া নিতে ১১ লাখ টাকা দিতে হবে। সে মোতাবেক ২০২৩ সালের ২৫ নভেম্বর ও ৬ ডিসেম্বর উজ্জলকে দুই কিস্তিতে নগদ ১১ লাখ টাকা দেন রাব্বি। ১২ ডিসেম্বর পাপ্পুকে এবং ১৭ জানুয়ারি সাঈদকে লিবিয়ায় পাঠানো হয়। সেখানে সাব্বির হোসেনসহ অজ্ঞাতনামা ৮–১০ জন আসামি পাপ্পুকে ২৫ মার্চ ত্রিপলিতে এবং সাঈদকে আজদাবিয়া জামা সোনা কিয়া শহরে আটকে রাখা হয়। পরে তাঁদের মুক্তিপণের জন্য পরিবারের কাছে ১০ লাখ টাকা চাওয়া হয়। এ ঘটনায় দুপচাঁচিয়া থানায় ৮ জুন মামলা হয়।
ওই অভিযোগের ভিত্তিতে ডিবির একটি দল উজ্জল হোসেন (৩৫) ও তাঁর সহযোগী সফাত মন্ডলকে (৩২) গ্রেপ্তার করেছে। তাঁদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ভুক্তভোগী সাঈদকে উদ্ধারপূর্বক বাংলাদেশে ফেরত আনা হয়। এরপর পাপ্পুর মুক্তিপণ হিসেবে চার লাখ টাকা দাবি করে চক্রটি। পরিবার ১ লাখ টাকা পাঠায়। ১ জুলাই সন্ধ্যায় পান্নু নামের এক ব্যক্তি বগুড়া সদর থানার চেলোপাড়া সিএনজিচালিত অটোরিকশার স্ট্যান্ডে মুক্তিপণের বাকি টাকা নিতে আসেন। সেখানে ওত পেতে থাকা ডিবির দল পান্নু ও তাঁর সহযোগী শিপলুকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পান্নু নিজেকে লিবিয়ায় অপহরণকারী পায়েলের ভাই বলে জানিয়েছেন। এরপর লিবিয়ায় অপহরণকারী চক্রের সঙ্গে যোগাযোগ করে পাপ্পুকে ছাড়ানোর ব্যবস্থা করা হয়।