পুলিশি হেফাজতে আসামিরা। ছবি : বাংলাদেশ পুলিশ

ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে অটোরিকশাচালক শাওনকে জবাই করে অটোরিকশা ছিনতাইয়ের অভিযোগে কিশোর গ্যাংয়ের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা জেলা পুলিশ। তাঁদের কাছ থেকে জব্দ করা হয়েছে ছিনতাইয়ে ব্যবহৃত চাকু; উদ্ধার করা হয়েছে লুণ্ঠিত অটোরিকশা। ঈদে ফুর্তির টাকা জোগাড় করতে এই কাণ্ড ঘটানোর কথা জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন আসামিরা।

শনিবার (১৫ জুন) এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান বিপিএম, পিপিএম (বার) জানান, তদন্তের একপর্যায়ে চার আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আসামিরা হলেন ভোলার লালমোহন থানা এলাকার মো. শাকিল আহমেদ ওরফে হ্যাঁচকা শাকিল (২০) এবং ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা এলাকার মো. সজিব (২০), মো. আলমগীর (২০) ও আনন্দ (২০)।

পুলিশ সুপার জানান, ১২ জুন রাতে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানাধীন স্বপ্নধারা মডেল টাউন এলাকায় শাওন নামের এক অটোচালকের গলা কেটে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিরা তাঁর অটোরিকশা নিয়ে পালিয়ে গেছেন বলে খবর আসে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বর থেকে। আহত অবস্থায় শাওনকে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ। এ ঘটনায় ১৩ জুন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগীর বাবা।

তিনি জানান, এরপর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কেরানীগঞ্জ সার্কেল) শাহাবুদ্দিন কবীর বিপিএম-এর নেতৃত্বে তদন্ত শুরু করে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা-পুলিশ। ঘটনাস্থল ও আশপাশের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে আসামিদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান বিপিএম, পিপিএম (বার)। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, আসামিরা প্রত্যেকে হ্যাঁচকা গ্রুপ নামের কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য। তাঁদের দলনেতা হ্যাঁচকা শাকিল। আসামি আলমগীর ভুক্তভোগী শাওনের বন্ধু। মূলত ঈদে ফুর্তির টাকা জোগাড় করতে শাওনের অটোরিকশা ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করেন শাকিল। পরিকল্পনা অনুযায়ী, আসামিরা শাওনের অটোরিকশায় চড়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানাধীন স্বপ্নধারা মডেল টাউন এলাকায় যান। সেখানে পৌঁছামাত্রই আসামিরা শাওনকে চেপে ধরেন এবং শাকিল চাকু দিয়ে গলায় আঘাত করেন। এরপর শরীরের বিভিন্ন অংশে চাকু দিয়ে আঘাত করেন। শাওনকে মৃত ভেবে অটোরিকশা নিয়ে ঘটনাস্থলে থেকে পালিয়ে যান আসামিরা।

পুলিশ সুপার জানান, তখনো বেঁচে ছিলেন শাওন। খবর পেয়ে পুলিশ তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করায়। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। গ্রেপ্তার আসামিদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।