সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ গোলাম আজাদ খান পিপিএম (বার)। ছবি : বাংলাদেশ পুলিশ

মানিকগঞ্জ জেলা পুলিশের তৎপরতায় পাচার হওয়া থেকে রক্ষা পেয়েছে দুই শিক্ষার্থী। নিখোঁজের চার দিন পর তাদেরকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় মানব পাচার চক্রের নারী সদস্য নুসরাত জাহান তানজিনাকে (২০) গ্রেপ্তার করেছে সাটুরিয়া থানা-পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) এক সংবাদ সম্মেলনে মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ গোলাম আজাদ খান পিপিএম (বার) জানান, এ ঘটনায় তিনজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনের বিরুদ্ধে সাটুরিয়া থানায় মামলা করেছেন এক ভুক্তভোগীর বাবা। মামলার আসামিরা হলেন সাটুরিয়া থানা এলাকার নুসরাত জাহান তানজিনা (২০), নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানা এলাকার মোসা. মালা বেগম ওরফে শারমীন (৩৬) ও মো. হৃদয় (৩৫)।

পুলিশ সুপার জানান, চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে গত ৪ মার্চ দুপুরে ভুক্তভোগীদের ঢাকায় নিয়ে যান আসামিরা। এরপর ভয়ভীতি দেখিয়ে ভুক্তভোগীদের অসামাজিক কার্যকলাপ করতে বাধ্য করেন মালা ও হৃদয়। ভুক্তভোগীদের পরিবার ও পুলিশের চাপে গত বুধবার (৮ মার্চ) সন্ধ্যায় দুই শিক্ষার্থীকে বাড়ির উদ্দেশ্যে গাড়িতে উঠিয়ে দেন হৃদয়। পরে গোলড়া বাসস্ট্যান্ড থেকে পুলিশ তাঁদের উদ্ধার করে।

ভুক্তভোগীরা জানান, আসামি নুসরাত দীর্ঘদিন ধরে ঢাকায় চাকরি করেন। পূর্বপরিচয়ের সূত্রে তাঁদের ঢাকায় চাকরি দেওয়ার কথা বলেন নুসরাত। পরে তাঁরা ঢাকায় চাকরি করার সিদ্ধান্ত নেন।

আসামি নুসরাত জাহান তানজিনা জানান, হৃদয়ের সঙ্গে ফেসবুকে তাঁর পরিচয়। অভাবের কারণে ঢাকায় গিয়ে হৃদয়ের কথামতো বিভিন্ন হোটেলে অসামাজিক কার্যকলাপ করেন তিনি। ওই দুই শিক্ষার্থীকে তিনি হৃদয়ের কাছে পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁদের পরিবার ও পুলিশের চাপে তাঁদেরকে বাড়িতে পাঠানোর কথা হৃদয়কে বলেন।

পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ গোলাম আজাদ খান পিপিএম (বার) জানান, সাটুরিয়াতে একই দিনে দুই শিক্ষার্থী নিখোঁজ হয়। তদন্তের একপর্যায়ে জানা যায়, ভুক্তভোগীদের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ঢাকায় পাচার করেছেন নুসরাত। সেখানে ভুক্তভোগীদের অসামাজিক কার্যকলাপে বাধ্য করা হয়।

ভুক্তভোগীদের মেডিকেল পরীক্ষা করা হয়েছে। মানব পাচার চক্রটি গ্রামের সহজ সরল অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে প্রথমে অসামাজিক কার্যকলাপে বাধ্য করত। এরপর দেশের বাইরে পাচার করত। এ ঘটনায় জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানান পুলিশ সুপার।