আলুটিলা গুহা। ছবি: সংগৃহীত

খাগড়াছড়ির জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র আলুটিলায় প্রায় পাঁচ কোটি টাকার প্রকল্প নিয়েছে সরকার, যেখানে থাকছে ঝুলন্ত সেতু, আম্ফিথিয়েটার, নন্দন পার্কসহ বিভিন্ন ব্যবস্থা।

তাছাড়া আলুটিলা পর্যটন এলাকায় নির্মাণ করা হচ্ছে রেস্ট হাউস ‘খুমপুই’, যা সম্পন্ন হলে পর্যটকদের আর রাত যাপনের জন্য শহরে ফেরার চিন্তা থাকবে না।

খাগড়াছড়ির ডিসি প্রতাপচন্দ্র বিশ্বাস বলেন, আলুটিলা জেলার প্রধান পর্যটন আর্কষণ। সম্ভাবনা অনুযায়ী আগে তেমন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

তিনি বলেন, ‘আমি এখানে পর্যটনের উন্নয়নে মাস্টার প্ল্যান গ্রহণ করেছি। ইতোমধ্যে সেভাবে কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। সব মিলিয়ে প্রায় পাঁচ কোটির টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।’ খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।

ডিসি জানান, প্রায় ৪২ লাখ টাকায় তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে ইতোমধ্যেই। পর্যটকদের পাহাড়ের বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে নির্মাণ করা হচ্ছে এম্ফিথিয়েটার। সেখানে দর্শক গ্যালিরিতে বসে ৫০০ পর্যটক একসঙ্গে পাহাড়ি সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হতে পারবেন। অনেক পর্যটক বেড়াতে এসে শহরে রাতযাপন করেন। পর্যটকরা যাতে আলুটিলা পাহাড়ে রাতযাপন করতে পারেন সেজন্য খুমপুই রেস্ট হাউস নির্মাণ করা হচ্ছে। দুই কোটির বেশি টাকা ব্যয়ে চারতলার এই রেস্ট হাউস নির্মাণ করা হচ্ছে।

তাছাড়া আলুটিলার দুই পাহাড়ের মধ্যে সংযোগ স্থাপনে ৮১ লাখ টাকা ব্যয়ে ঝুলন্ত সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, এতে পর্যটকরা গুহা দেখে ঝুলন্ত সেতুর মাধ্যমে এক পাহাড় থেকে অন্য পাহাড়ে যেতে পারবেন। পাহাড়গুলোয়ও পর্যটন বান্ধব স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে। ল্যান্ডস্কেপ গার্ডেন সেন্টার করা হচ্ছে, যেখানে বসে পর্যটকরা পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন। পাহাড়ে যে ধরনের স্থাপত্যশৈলী দেখা যা তার সঙ্গে সংগতি রেখেই সবকিছু নির্মাণ করা হচ্ছে।
খাগড়াছড়ি শহর থেকে প্রায় ছয় কিলোমিটার দূরে এই পর্যটনকেন্দ্রটি জেলা প্রশাসনের আওতায়।

ডিসি তাপচন্দ্র বলেন, “ভিউ পয়েন্ট কুঞ্জছায়া থেকে পাখির চোখে দেখা যায় নয়নাভিরাম খাগড়াছড়ি শহর, দূরের পর্বতশ্রেশি। বৃষ্টির সময় মেঘ এসে ছুঁয়ে যায় পর্যটকদের।”

আলুটিলায় বেড়াতে আসা নুসরাত জাহান বলেন, “কুঞ্জছায়া নতুন হয়েছে। এখান থেকে দিগন্তবিস্তৃত্ব পাহাড় দেখা যায়। নতুন গেট হয়েছে। আগে কোনো গেট ছিল না। নতুন অনেক স্থাপনা হচ্ছে। বিশেষ করে ঝুলন্ত সেতু। এর নির্মাণকাজ শেষ হলে পর্যটনকেন্দ্রটি আরও আর্কষণীয় হবে। এখানে আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। রাতেও এখান থেকে শহর দেখা যায়। এখানে নিরাপদে ভ্রমণ করা যায়। দিনে ও রাতে আলাদা সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়।’
আলুটিলা ঘিরে ‘ম্যাউন্টেন ট্যুরিজমের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে’ বলে মনে করেন খাগড়াছড়ি পর্যটন মোটেলের ইউনিট ইনচার্জ এ কে এম রফিকুল ইসলাম।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “নতুন এই উদ্যোগে পাহাড়ের পর্যটন অর্থনীতি আরও বিকশিত হবে। খুমপুই রেস্ট হাউসের কাজ শেষ হলে পর্যটকরা আলুটিলায় রাতযাপন করতে পারবেন।”