উদ্ধার হওয়া ১৩টি মোটরসাইকেল।

২০১৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৫০০ এর বেশি মোটরসাইকেল চুরির সঙ্গে জড়িত চোর চক্রের পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা ওয়ারী বিভাগ। খবর ডিএমপি নিউজের।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন নুর মোহাম্মদ, মো. রবিন, মো. আবু বকর সিদ্দিক ওরফে সজল, মো. মনির হোসেন এবং মো. আকাশ। এ সময় তাদের হেফাজত থেকে ১৩টি চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।

গত মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে ডিবি ওয়ারী বিভাগের সংঘবদ্ধ অপরাধ ও গাড়ি চুরি প্রতিরোধ টিম।

আজ বুধবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনে এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বিপিএম (বার), পিপিএম (বার)।

তিনি জানান, গত ২ এপ্রিল টিকাটুলীর সালাউদ্দিন ভবনের মার্কেটের পার্কিং প্লেস থেকে মো. সাদেক হোসেনের একটি জিক্সার মোটরসাইকেল চুরি হয়। ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে ওয়ারী থানায় একটি মামলা হয়। পরবর্তী সময়ে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় ডিএমপির গোয়েন্দা পুলিশকে। এ ছাড়া গেন্ডারিয়া থানার আরেকটি মোটরসাইকেল চুরির মামলাও তদন্তের দায়িত্ব পায় ডিবি পুলিশ।

গোয়েন্দা প্রধান জানান, মামলা দুটি ডিবির সংঘবদ্ধ অপরাধ ও গাড়ি চুরি প্রতিরোধ টিমের সহকারী পুলিশ কমিশনার মাহফুজুর রহমানের নেতৃত্বে কাজ শুরু করে একটি চৌকস টিম। প্রথমে ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ ও প্রযুক্তির সহায়তায় তাদের অবস্থান নিশ্চিত করে নুর মোহাম্মদ ও মো. রবিন নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরবর্তী সময়ে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অপর তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতদের অপরাধের কৌশল সম্পর্কে ডিবি প্রধান বলেন, এ চক্রের নুর মোহাম্মদ ও রবিন মোটরসাইকেল চুরি করার জন্য টার্গেটকৃত মোটরসাইকেলের আশপাশে গিয়ে ঘোরাঘুরি করে, চা কিংবা সিগারেট খায়। পরবর্তী সময়ে সুযোগ বুঝে তাদের নিজেদের তৈরি করা ‘মাস্টার কি’ দিয়ে স্টার্ট করে মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায়। এরপর চুরি করা সেই মোটরসাইকেলটি তাদের অপর সহযোগী আবু বকর সিদ্দিক, মনির হোসেন এবং মো. আকাশের মাধ্যমে পোস্তগোলা কিংবা বাবুবাজার ব্রিজ পার হয়ে দোহার এলাকায় নিয়ে যায়। সেখানে বর্ডার ক্রস করা গাড়ি বলে কমদামে সেগুলো বিক্রি করে থাকে। এরা এই ‘মাস্টার কি’ টি এমনভাবে তৈরি করে যা দিয়ে যেকোনো মোটরসাইকেল খুব সহজেই চালু করতে পারে।

তিনি বলেন, এ চক্রটি মূলত পুরান ঢাকা এলাকায় মোটরসাইকেল চুরি করে থাকে। এদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।

এ ছাড়া যারা চুরি করে এবং কম টাকায় এসব চোরাই মোটরসাইকেল কিনে ব্যবহার করে, তারাও একই অপরাধে অপরাধী হবে বলে তিনি যোগ করেন। কারোর মোটরসাইকেল চুরি হলে সংশ্লিষ্ট থানায় জানিয়ে ডিবি পুলিশকে অবগত করার জন্য অনুরোধ করেন তিনি।

তিনি বলেন, পুলিশের রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, গ্রেপ্তারকৃত প্রত্যেকের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।

উদ্ধার হওয়া ১৩টি মোটরসাইকেলের মধ্যে ইতোমধ্যে ৫ জনের মালিকানা নিশ্চিত হওয়া গেছে।