গ্রেপ্তার নেওয়াজ শরীফ রাসেল। ছবি : সমকাল

মাত্র ১ হাজার ৪০০ টাকার জন্য ২০০৭ সালে কুমিল্লার লাকসামে তিনজনকে গলা কেটে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। ওই ঘটনায় মৃত্যুদণ্ড পাওয়া নেওয়াজ শরীফ রাসেল ওরফে সবুজকে ১৭ বছর পর গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

গ্রেপ্তার আসামি লাকসাম উপজেলার শ্রীয়াং এলাকার বানিন্দা। খবর সমকালের।

সোমবার (২৯ আগস্ট) দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-১১, সিপিসি-২ কুমিল্লার কোম্পানি অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রোববার রাতে জেলার সদর উপজেলার আলেখারচর এলাকা থেকে নেওয়াজ শরীফ রাসেলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’

র‌্যাব জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে রাসেল হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেছে। ঘটনার পরদিন রাসেল ঢাকার সাভার উপজেলার ডগরমুরা এলাকায় তাঁর বাবার বন্ধুর বাড়িতে আশ্রয় নেন। নিজের আসল পরিচয় গোপন রাখার জন্য রাসেল ডগরমুরা এলাকায় সবুজ নামে পরিচিতি লাভ করেন। তিনি কখনও হকার, কখনও বাসের হেলপারের কাজ করে আসছিলেন।

সর্বশেষ ২০২০ সালে কুমিল্লায় ফিরে এসে বরুড়ায় বসবাস শুরু করে। ওই সময় তিনি রাজমিস্ত্রির সহযোগী হিসেবে কাজ শুরু করেন। তাঁকে লাকসাম থানায় হস্তান্তরের পর আদালতের মাধ্যমে জেলে পাঠানো হয়েছে।

কী ঘটেছিল

২০০৭ সালের ৬ জানুয়ারি রাতে রাসেলসহ তাঁর কয়েকজন সহযোগী লাকসামের স্থানীয় ব্যবসায়ী উত্তম দেবনাথ, পরীক্ষিত দেবনাথ ও বাচ্চু মিয়াকে মারধর করে ১ হাজার ৪০০ টাকা লুট করেন। ওই সময় রাসেল ও তাঁর সহযোগীদের চিনতে পেরে ব্যবসায়ী উত্তম দেবনাথ স্থানীয় চেয়ারম্যানের কাছে নালিশ করার হুমকি দেয়। এতে আসামি রাসেল ও তার সহযোগীরা তিন ব্যবসায়ীকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেন। পরে তাদের পার্শ্ববর্তী একটি মাঠে নিয়ে চাপাতি ও ছোরা দিয়ে গলা কেটে হত্যা করেন।

ওই ঘটনায় নিহত বাচ্চু মিয়ার ভাই কবির হোসেন পরদিন লাকসাম থানায় খুনসহ ডাকাতির মামলা করেন।

মামলার চার্জশিট ও শুনানি শেষে ২০১৮ সালের ১৪ নভেম্বরে কুমিল্লার তৎকালীন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ চতুর্থ আদালতের বিচারক নুর নাহার বেগম শিউলী মামলায় অভিযুক্ত পাঁচজন আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, রাসেল, আব্দুর রহমান, শহীদুল্লাহ, ফারুক হোসেন ও স্বপন। তাদের মধ্যে আব্দুর রহমান, শহীদুল্লাহ ও ফারুক হোসেন আগেই গ্রেপ্তার ছিল। সর্বশেষ গ্রেপ্তার হয়েছে রাসেল। আসামি স্বপন এখনও পলাতক।