পুলিশের হেফাজতে গ্রেপ্তার আসামি নুরুল আমিন। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

২ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা থানা এলাকা থেকে ছিনতাই হওয়া চারটি মোবাইল ফোন, টাকাসহ এক ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করেছে।

২০ নভেম্বর মুক্তাগাছা থানাধীন ধুললা ইউনিয়নের কালুরঘাট গ্রামে অভিযান চালিয়ে ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়।

জানা গেছে, নরসিংদী জেলার মাধবদী থানার বাসিন্দা শক্তি চন্দ্র ঘোষ (৩৮) (বর্তমানে ঢাকার খিলখেত থানার নিকুঞ্জ-২ এ থাকেন) গত ১৯ নভেম্বর ২ এপিবিএনের অধিনায়ক (অতিরিক্ত ডিআইজি) বরাবর মো. আজিজুল হক (৩৬), মো. তোফাজ্জল হোসেন রুপা (৩২), মো. ইস্রাফিল(৩২), মো. সুমন (২৬), সবুজ ওরফে থ্যাটা (২৩), নুরুল আমিন(২৫), মো. নাঈম (২৫)সহ আরও অজ্ঞাতনামা ৭/৮ জনের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ করেন।

অভিযোগে শক্তিচন্দ্র উল্লেখ করেন, তাঁর ছোট ভাইয়ের মাধ্যমে কিছুদিন আগে ৬ নং বিবাদী অর্থাৎ নুরুল আমিনের সাথে তাঁর পরিচয় হয়। তিনি (শক্তিচন্দ্র) পেশায় একজন ব্যবসায়ী। ঢাকার খিলগাঁওতে “হেলদি মিট”নামে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান আছে। তিনি দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ছাগল কিনে হোটেলে মাংস সরবরাহ করেন। নুরুল আমিন তাঁর এ ব্যবসার কথা জানতে পেরে তাঁর পরিচিত লোকদের কাছ থেকে কম দামে ছাগল কিনে দেওয়ার আশ্বাস দেন এবং তাঁকে ১০ নভেম্বর ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা থানা এলাকায় এলে কম দামে ছাগল কিনে দেবেন বলে জানান। তিনি নুরুল আমিনের কথা সরল মনে বিশ্বাস করে ১০ নভেম্বর বেলা আনুমানিক ১টায় টাকা ও দুজন সঙ্গী মো. জুলহাস উদ্দিন (২৮) ও মো. তাজ উদ্দিনকে (৫৫)সঙ্গে নিয়ে প্রাইভেট কার ভাড়া করে মুক্তাগাছা থানাধীন কালীবাড়িতে আসেন। সেখানে নুরুল আমিন ও ৭ নং বিবাদী অর্থাৎ মো. নাঈম তাদের রিসিভ করেন। বেলা ২টার সময় নয়াপাড়া এলাকার কালুরঘাট বোয়ালমারী কাঠের বাগানে নিয়ে যান। সেখানে উল্লেখিত সব বিবাদী উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা তাদেরকে ছাগল না দিয়ে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে অতর্কিত আক্রমণ করেন এবং মারধর করে জখম করেন এবং তাদের কাছে থাকা মোট ৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা এবং ৪টি অ্যান্ড্রয়েড ও ৫টি বাটন মোবাইল ফোন জোর করে ছিনিয়ে নেন। এরপর বিবাদীরা তাদের খুন-জখমের হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে তাড়িয়ে দেন। এরপর তিনিসহ তাঁর সঙ্গে থাকা সবাই প্রাণের ভয়ে ওই স্থান থেকে চলে আসেন।

পরে পার্শ্ববর্তী শিমুলতলা বাজারে এসে স্থানীয় উপস্থিত লোকজনকে ঘটনাটি জানান। তিনি স্থানীয় লোকদের নুরুল আমিনের নাম বললে তাঁরা তাঁর ঠিকানা বলেন। এরপর তিনি উল্লেখিত ঘটনায় আইনগত সহায়তার জন্য ২ এপিবিএনের, অপস্ অ্যান্ড ইন্টেলিজেন্স শাখায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

ভিকটিমের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ২ এপিবিএনের অধিনায়ক (অতিরিক্ত ডিআইজি) আলী আহমদ খানের সার্বিক দিকনির্দেশনায় ২ এপিবিএন অপারেশন অ্যান্ড ইন্টেলিজেন্স শাখার এসআই (নিরস্ত্র) সৈয়দ আসাদুজ্জামান সঙ্গীয় অফিসার, ফোর্সসহ এপিবিএন হেডকোয়ার্টার্সের এলআইসি/সিআইএ শাখার উন্নত প্রযুক্তির সহায়তায় উল্লেখিত বিবাদীর অবস্থান শনাক্ত করেন। এরপর ২০ নভেম্বর মুক্তাগাছা থানাধীন ধুললা ইউনিয়নের কালুরঘাট গ্রামে অভিযান চালিয়ে নুরুল আমিনকে আটক করেন। জিজ্ঞাসাবাদে নুরুল আমিন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন এবং বাকি বিবাদীদের নাম-ঠিকানা প্রকাশ করেন। এরপর নুরুল আমিনের বসতবাড়ি তল্লাশি করে ছিনিয়ে নেওয়া ১টি অ্যান্ড্রয়েড, ৩টি বাটন মোবাইল ফোন এবং ২০ হাজার টাকা উদ্ধার করে এসআই সৈয়দ আসাদুজ্জামান জব্দ তালিকামূলে জব্দ করেন।

পরে গ্রেপ্তার আসামিকে ও উদ্ধারকৃত ৪টি মোবাইল ফোন এবং ২০ হাজার টাকা মুক্তাগাছা থানায় সোপর্দ করা হয়।

ভিকটিমের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গ্রেপ্তার আসামির বিরুদ্ধে মুক্তাগাছা থানায় মামলা করা হয়।