গ্রেপ্তার আইয়ুব আলী।

ফেনীর সোনাগাজীতে বিয়ের আশ্বাসে ধর্ষণ ও প্রতারণার ঘটনায় করা মামলায় ১০ বছরের সাজা পেয়েছিলেন আইয়ুব আলী (৫৮)। সেই সাজা থেকে বাঁচতে তিনি ৩৩ বছর পালিয়ে ছিলেন পাকিস্তানে। ৩৩ বছর পালিয়ে থেকেও তাঁর শেষ রক্ষা হয়নি। শেষ পর্যন্ত পুলিশের কাছে ধরা পড়েছেন। খবর প্রথম আলোর।

গতকাল মঙ্গলবার উপজেলার চর দরবেশ ইউনিয়নের পশ্চিম চর দরবেশ এলাকা থেকে আইয়ুব আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি ওই এলাকার বাসিন্দা।

সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.খালেদ হোসেন জানান, গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আইয়ুব আলীকে বিকেলে আদালতের মাধ্যমে ফেনীর কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

থানা-পুলিশ জানায়, ১৯৮৯ সালে বিয়ের আশ্বাসে ধর্ষণ ও প্রতারণার অভিযোগে আইয়ুব আলীর বিরুদ্ধে ফেনীর আদালতে একটি মামলা হয়। ওই মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। পরে জামিনে বের হয়ে আত্মগোপনে চলে যান তিনি। তিনি আর আদালতে হাজির না হয়ে গোপনে পাকিস্তানে চলে যান। দীর্ঘদিন আদালতে হাজির না হওয়ায় ১৯৯১ সালে আদালত তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন।

দীর্ঘদিন পর গত সোমবার রাতে হঠাৎ তিনি বাড়ি ফিরে আসেন।

সোনাগাজী থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) জুয়েল সরকার বলেন, আদালত থেকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা পাওয়ার পর থানার অনেক কর্মকর্তা আইয়ুব আলীর খোঁজে মাঠে নামেন। কিন্তু তাঁর কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। তাঁরা দুই মাস আগে জানতে পারেন, পাকিস্তানে ২৫ বছর থাকার পর আইয়ুব আলী দেশে ফিরেছেন। এরপরও তিনি গ্রেপ্তার এড়াতে প্রায়ই স্থান পরিবর্তন করে চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করেন। দুই সপ্তাহ আগে তাঁকে ধরতে তিনি ছদ্মবেশে আইয়ুব আলীর গ্রামের বাড়ি, চট্টগ্রাম ও সম্ভাব্য কয়েকটি স্থানে গিয়ে খোঁজখবর নেন। পরে এক ব্যক্তির মাধ্যমে আইয়ুব আলীর ঠিকানা, মুঠোফোন নম্বর ও ছবি সংগ্রহ করেন। সেই নম্বরের সূত্র ধরেও চট্টগ্রাম ও উপজেলার পশ্চিম চর দরবেশ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করতে ব্যর্থ হন। দীর্ঘদিন পর হঠাৎ করে গত সোমবার রাতে তিনি বাড়ি আসেন।

এএসআই জুয়েল বলেন, কিন্তু পরিবারের লোকজন ও স্বজনেরা আইয়ুব আলীকে চিনতে পারছিলেন না। তবে রাত গভীর হওয়ায় বাড়ির লোকজন তাঁকে রাত্রি যাপন করতে ঘরে জায়গা দেন। ইতিমধ্যে দীর্ঘ ৩৩ বছর পর আইয়ুব আলী বাড়ি ফিরেছেন, এমন খবর স্থানীয়দের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। পরে গোপন মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসে।