হাতি হত্যা বন্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার পাশাপাশি এ বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়াতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

কী পদক্ষেপ বা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে পরিবেশসচিব, তথ্যসচিব, প্রধান বন সংরক্ষক ও বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিচালককে প্রতিবেদনও দিতে বলা হয়েছে।

এ-সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার রুলসহ এই আদেশ দেন। খবর বিডিনিউজের।

বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২ অনুসারে ১২টি ‘এলিফ্যান্ট করিডর’সহ অন্যান্য করিডরকে সংরক্ষিত অঞ্চল ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং হাতি হত্যা বন্ধে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তাকে কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।

পরিবেশসচিব, আইনসচিব, তথ্যসচিব, প্রধান বন সংরক্ষক ও বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিচালক, জামালপুর, শেরপুর, রাঙামাটি, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, বান্দরবানের জেলা প্রশাসকসহ ২০ বিবাদীকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খান খালিদ আদনান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।

খালিদ আদনান বলেন, বন অধিদপ্তর থেকে জরিপ করে বন্য হাতির অবাধ চলাচলের জন্য ১২টি করিডর নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২ অনুসারে এসব করিডর সংরক্ষিত অঞ্চল ঘোষণা করা হয়নি।

তিনি বলেন, ‘ফলে এসব করিডর কী অবস্থায় আছে, আমাদের জানা নেই। এসব করিডর সংরক্ষণ না করার কারণেই লোকালয়ে এসে মারা পড়ছে হাতি। করিডরগুলো সংরক্ষণ করলে মানুষের হাতে এভাবে হাতি মারা পড়ত না।’

চট্টগ্রাম, কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বন্য হাতি হত্যা বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে রোববার হাইকোর্টে সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদনটি করেন ঢাকার মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা আদনান আজাদ, তাঁর স্ত্রী ফারজানা ইয়াসমিন ও এলিফ্যান্ট রোডের বাসিন্দা খান ফাতিম হাসান।

সম্প্রতি চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে তিনটি হাতি হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়।

প্রতিবছরের ১২ আগস্ট পালন করা হয় বিশ্ব হাতি দিবস। এ দিবসে এবারের প্রতিপাদ্য ছিল- ‘হাতি করলে সংরক্ষণ, রক্ষা পাবে সবুজ বন’।

সরকারি হিসাবে, দেশে এখন ২৫০ থেকে ৩০০ হাতি টিকে আছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হাতির চলার পথ দখলমুক্ত করতে হবে, সেই সঙ্গে রক্ষা করতে হবে বনের স্বাস্থ্য। না হলে কেবল হাতি নয়, অনেক বন্য প্রাণীর অস্তিত্বই আর টেকানো যাবে না।