পুলিশি হেফাজতে আসামিরা। ছবি: পুলিশ নিউজ

যশোর জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা অভিযান চালিয়ে একাধিক হত্যা মামলার আসামি চরমপন্থী সংগঠন নিউ বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টির নেতা বাসুদেব সাহা ওরফে কিরণ ওরফে তপন ওরফে বাদল ওরফে মাহমুদুর রহমানকে (৩৯) গ্রেপ্তার করেছে। এ ছাড়া তাঁর দুই সহযোগী দীপংকর মণ্ডল (৩৩) ও কৃষ্ণপদ মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় আসামিদের কাছ থেকে একটি বন্দুক ও দুটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।

জেলা পুলিশ জানায়, গত বছরের ১৯ নভেম্বর মনিরামপুর থানাধীন মনোহরপুর এলাকায় প্রকাশ মল্লিক নামের এক ব্যক্তির লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় নিহতের ভাই মনিরামপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। গত ১৯ জানুয়ারি অভয়নগর থানাধীন হরিশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে সুন্দলী ইউনিয়ন পরিষদের নবনির্বাচিত সদস্য উত্তম সরকারের গুলিবিদ্ধ লাশ মেলে। এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। মামলা দুটি ক্লুলেস ও চাঞ্চল্যকর হওয়ায় তদন্তের দায়িত্ব পায় জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তদন্তকালে চরমপন্থী সংগঠনের ১২ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁদের কাছ থেকে জব্দ করা হয় তিনটি ওয়ান শুটারগান, ১০টি কার্তুজ, তিনটি গুলি, একটি এয়ারগান ও মোবাইল ফোন।

তদন্তকালে জানা যায়, আসামিরা কথিত চরমপন্থী সংগঠন নিউ বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টির পরিচয় দিয়ে অভয়নগর ও মনিরামপুর এলাকার বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও বিত্তশালীদের ফোন করে চাঁদা দাবি করতেন। চাঁদা না পেয়ে তাঁদের হত্যা করে ত্রাস সৃষ্টি করা হয়।

গোয়েন্দা পুলিশ জানায়, কোনোভাবেই কিরণকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হচ্ছিল না। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ১৯ এপ্রিল ময়মনসিংহ, ঢাকা, বরিশাল ও পটুয়াখালীতে অভিযান চালিয়ে ব্যর্থ হয় পুলিশ। সবশেষ ২২ এপ্রিল মাদারীপুর সদর থানাধীন পুরাতন বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে কিরণকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন কিরণ। পরে তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অভয়নগর থানাধীন রামসারা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁর দুই সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হয়।