মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতেই স্মার্ট বাহিনী হিসেবে বাংলাদেশ আনসারকে গড়ে তোলা হচ্ছে। জাতীয় যেকোনো প্রয়োজনে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে আনসার বাহিনী।

আজ সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকালে গাজীপুরের কালিয়াকৈরের সফিপুরে আনসার ও ভিডিপি একাডেমিতে বাহিনীর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও ৪৪তম জাতীয় সমাবেশ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। খবর বাংলাদেশ জার্নালের।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের ১৭ কোটি মানুষের দেশ। কাজেই এই মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা, আর্থসামাজিক উন্নতি করা এবং তাদের নিরাপত্তা বিধান করা, এটাই আমাদের কাজ। সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদকের হাত থেকে আমরা দেশকে রক্ষা করতে চাই। দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান সব সময় অব্যাহত থাকবে।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। আমরা আর পেছনে ফিরে তাকাব না। উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ হিসেবে আমরা এগিয়ে যাব।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০৪১ সালের মধ্যে আমরা ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত স্মার্ট সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলে জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণ করব। নিরাপদ ও জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব সহনীয় সমৃদ্ধিশালী ব-দ্বীপ গড়ার লক্ষ্য নিয়ে শতবর্ষ মেয়াদি ডেল্টা প্ল্যান প্রণয়ন করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘দেশের প্রত্যেক মানুষ যেন সুরক্ষিত থাকে, উন্নত জীবন পায় এবং প্রত্যেকে যেন নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে, সে জন্য আমরা কাজ করছি। বিশেষ করে আমাদের তরুণসমাজ, তারাই হবে আমাদের স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট নাগরিক।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘জাতীয় যেকোনো প্রয়োজনে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছে। নির্বাচন ঠেকানোর নামে বিএনপি-জামায়াতের ধ্বংসাত্মক কর্মসূচি প্রতিহত করে জাতীয় সম্পদ রক্ষায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন তারা।’

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পুরাতন আইন পরিবর্তন করে আমরা ‘আনসার ব্যাটালিয়ন আইন, ২০২৩’ পাস করেছি। এতে করে তারা অন্য বাহিনীর সদস্যদের মতো প্রথম দিন থেকেই স্থায়ী হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। এ ছাড়া উপজেলা আনসার কোম্পানি কমান্ডার, ইউনিয়ন প্লাটুন কমান্ডার ও ইউনিয়ন দলনেতা/দলনেত্রীদের আইডি কার্ড দেওয়া হয়েছে ও মাসিক সম্মানী ভাতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। সাধারণ আনসার সদস্যদের ভাতা বৃদ্ধি এবং রেশনসামগ্রীর উপকরণ বৃদ্ধি করা হয়েছে। নারী ভিডিপি সদস্যদের জন্য আধুনিক ডিজাইনের নতুন শাড়ি প্রবর্তন করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘জাতীয় ক্রীড়া ও সংস্কৃতি বিকাশে এ বাহিনীর অবদান উল্লেখযোগ্য। বাংলাদেশ গেমস এ পরপর ৫ বার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সাফল্য অর্জনের পর থেকে আজ অবধি বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ক্রীড়ানৈপুণ্য প্রদর্শনের মাধ্যমে দেশের সুনাম ও সম্মান বৃদ্ধিতে অসামান্য অবদান রাখছেন। আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী দেশের নতুন ও খ্যাতিমান ক্রীড়াবিদ তৈরির সূতিকাগার। তারা যাতে দেশ ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ক্রীড়াক্ষেত্রে আরও সুনাম বয়ে আনতে পারে, সে জন্য বাহিনীতে একটি ক্রীড়া কমপ্লেক্স নির্মাণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’

অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সিনিয়র সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান, বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এ কে এম আমিনুল হক, অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজিম উদ্দিন, আনসার ও ভিডিপি একাডেমির কমান্ড্যান্ট মো. নূরুল হাসান ফরিদী, বাহিনীর উপমহাপরিচালক।

অসীম সাহসিকতা ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ১৮০ জন সদস্যকে প্রেসিডেন্ট গ্রাম প্রতিরক্ষা দল পদক, বাংলাদেশ গ্রাম প্রতিরক্ষা দল পদক, প্রেসিডেন্ট আনসার পদক ও বাংলাদেশ আনসার পদক তুলে দেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।