বাবা রিকশাচালক হওয়ায় বিয়ের মাত্র তিন মাসেই বিচ্ছেদ হয়ে যায় মোছা. শারমিন আক্তার সুমির। তবে দমে যাননি সুমি। কঠোর পরিশ্রম করে রংপুর মেডিকেল কলেজে পড়ার যোগ্যতা অর্জন করেন। এমন খুশির খবর পেয়েও পরিবারে আনন্দ ছিল না। রিকশাচালক বাবা পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি হওয়ায় মেডিকেল কলেজে পড়াশোনা চালানোর খরচ নিয়ে দেখা দেয় সংকট। সুমির সেই সংকটে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মো. আব্দুল বাতেন বিপিএম, পিপিএম।
রোববার (১৭ এপ্রিল) জয়পুরহাট পুলিশ লাইনস ড্রিলশেডে ডিআইজির সার্বিক সহযোগিতা ও উদ্যোগে সুমির জন্য ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের স্কলারশিপের ব্যবস্থা করা হয়। জয়পুরহাট জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মাছুম আহাম্মদ ভূঞা পিপিএম (সেবা)-এর সভাপতিত্বে জয়পুরহাট-২ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন সুমিকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। এ সময় সুমির পরিবারের হাতে ঈদের উপহার তুলে দেওয়া হয়।
মোছা. শারমিন আক্তার সুমি জয়পুরহাট সদর থানাধীন আমদই ইউনিয়নের কয়তাহারের বাসিন্দা। কয়তাহার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পিএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ-৫ পান। ২০১৯ সালে এসএসসি পরীক্ষায়ও জিপিএ-৫ পান। এরপর বিয়ে হয় সুমির। কিন্তু বাবা রিকশাচালক হওয়ায় বিয়ের মাত্র তিন মাসেই বিচ্ছেদ হয়ে যায়। থেমে না থেকে কালাই সরকারি মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়ে জিপিএ-৫ পান সুমি। এরপর এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে কৃতকার্য হন। তবে অভাবের সংসারে একমাত্র উপার্জনক্ষম রিকশাচালক বাবার আয় দিয়ে মেডিকেলে পড়াশোনার খরচ চালানো নিয়ে দেখা দেয় সংশয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরে মেডিকেলে পড়ার জন্য সার্বিক স্কলারশিপের উদ্যোগ নেন রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মো. আব্দুল বাতেন বিপিএম, পিপিএম।
রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজির প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সুমি বলেন, ‘মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েও পরিবারে আনন্দ ছিল না। আমার মতো হতদরিদ্রের পাশে যে রাজশাহী রেঞ্জের সম্মানিত ডিআইজি স্যার দাঁড়াবেন, তা আমি স্বপ্নেও ভাবিনি।’