সিএমপির ‘আমার গাড়ি নিরাপদ’উদ্যোগের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সিএমপি কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর, পিপিএমসহ অন্যরা। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

জনসাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিতে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) অনন্য একটি উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এই উদ্যোগের নাম দেওয়া হয়েছে ‘আমার গাড়ি নিরাপদ’। চট্টগ্রাম নগরের দামপাড়ায় মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইনসে ৬ ডিসেম্বর (সোমবার) এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন সিএমপি কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর, পিপিএম।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সিএনজিচালিত অটোরিকশাকে সব ধরনের যাত্রী, বিশেষ করে নারী ও শিশুদের জন্য দিন-রাত সব সময় নিরাপদ বাহন হিসেবে প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে সিএমপি নতুন এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এই উদ্যোগের আওতায় মহানগরী এলাকায় চলাচলরত বৈধ কাগজসংবলিত সব সিএনজিচালিত অটোরিকশার মালিক ও চালকদের নির্দিষ্ট ফরম পূরণ করার মাধ্যমে নিশ্চায়ন করা হবে। মালিক ও চালকের সব তথ্য পুলিশ সার্ভারে জমা রেখে প্রত্যেককে একটি আলাদা কিউআর কোড এবং নিউমারিক আইডি কার্ড দেওয়া হবে। পরবর্তীকালে যাত্রীরা ওই আইডি অথবা কিউআর কোড স্ক্যান করে চালক ও মালিক সম্পর্কিত সব তথ্য জানতে পারবেন।

‘আমার গাড়ি নিরাপদ’উদ্যোগের ব্যবহারবিধি।

সিএমপি জানায়, কোনো যাত্রী অটোরিকশায় যাত্রার আগে যদি গাড়িতে প্রিন্টেড কিউআর কোড দেখেন, তাহলে তিনি বুঝতে পারবেন, গাড়িটি সিএমপি কর্তৃক নিশ্চায়নকৃত। যাত্রীরা স্মার্টফোনের সাহায্যে সিএমপির ‘হ্যালো সিএমপি’অ্যাপে স্ক্যান করে অটোরিকশার চালক ও মালিক সম্পর্কে তথ্য জানতে পারবেন। সেখানে মালিক ও চালকের ছবিও দেখতে পারবেন তাঁরা। সঙ্গে স্মার্টফোন না থাকলেও চিন্তা নেই। ফিচার ফোন থেকে প্রিন্টেড কপিতে থাকা নিউমারিক কোডটি সিএমপির নির্ধারিত নম্বরে পাঠালে ফিরতি খুদে বার্তায় চালক ও মালিকের তথ্য জানানো হবে।

‘আমার গাড়ি নিরাপদ’উদ্যোগে নিবন্ধনের নিয়ম।

সিএমপি জানায়, যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অনেক সময় যাত্রীরা তাঁদের অনেক মূল্যবান সামগ্রী সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ফেলে যান। সে ক্ষেত্রে যদি নিউমারিক আইডি অথবা কিউআর কোড স্ক্যান করা থাকে, তাহলে পরবর্তীকালে সহজেই অটোরিকশাটি খুঁজে পাওয়া সম্ভব হবে। সিএনজিচালিত অটোরিকশার মাধ্যমে সংঘটিত বিভিন্ন অপরাধ সহজেই উদ্ঘাটন ও নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। অটোরিকশার মালিক তাঁর গাড়ি কোনো চালককে দেওয়ার আগে সহজেই চালকসম্পর্কিত তথ্য যাচাই করে নিশ্চিত হতে পারবেন।

গাড়ির মালিকদের ক্ষেত্রে ‘আমার গাড়ি নিরাপদ’উদ্যোগে নিবন্ধনের জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র, গাড়ির রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট, ফিটনেস সার্টিফিকেট, ট্যাক্স টোকেন, রুট পারমিটের কাগজপত্র প্রয়োজন হবে। আর চালকদের ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র, ড্রাইভিং লাইসেন্সের প্রয়োজন হবে।

প্রাথমিকভাবে চট্টগ্রাম নগরের আটটি জায়গায় স্থাপিত বুথের মাধ্যমে অটোরিকশার মালিক ও চালকেরা নিবন্ধন সম্পন্ন করতে পারবেন। এই জায়গাগুলো হলো টাইগারপাস ট্রাফিক পুলিশ বক্স, নিউমার্কেট ট্রাফিক পুলিশ বক্স, বহদ্দারহাট ট্রাফিক পুলিশ বক্স, জিইসি মোড় ট্রাফিক পুলিশ বক্স, বাদামতলী ট্রাফিক পুলিশ বক্স, অলংকার ট্রাফিক পুলিশ বক্স, মইজ্জারটেক ট্রাফিক পুলিশ বক্স ও সিমেন্ট ক্রসিং ট্রাফিক পুলিশ বক্স।

‘আমার গাড়ি নিরাপদ’উদ্যোগে নিবন্ধিত সিএনজিচালিত অটোরিকশায় যুক্ত করা হবে সিএমপির নিশ্চায়নকৃত কিউআর কোড ও নিউমারিক কোড। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

‘আমার গাড়ি নিরাপদ’ উদ্যোগের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) শ্যামল কুমার নাথ, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) মো. শামসুল আলম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (প্রশাসন ও অর্থ) সানা শামীনুর রহমান, উপ-পুলিশ কমিশনার (সদর) মো. আমির জাফরসহ পুলিশের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং পরিবহনমালিক ও শ্রমিকনেতারা।