পুলিশি হেফাজতে মিথ্যা মামলার ভিকটিম মো.মাসুম বিল্লাহ। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ।

সিআইডির জালে ধরা পড়ল পটুয়াখালীর আত্মগোপনে থাকা অপহরণ ও হত্যা করে লাশ গুম করা মিথ্যা মামলার ভিকটিম।

সম্প্রতি পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার মোসা. কুলসুম বেগম আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন যে, তার ছেলে মো. মাসুম বিল্লাহকে (২৭) তার স্ত্রী,শ্বশুর ও শাশুড়ি অপহরণ করে হত্যা করে লাশ গুম করেছেন।

এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া আমলী আদালতে মামলা দায়ের হয়।

লাশ গুমের এ ঘটনা দেশজুড়ে বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে এবং বিভিন্ন প্রিন্ট, অনলাইন ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় গুরুত্বের সঙ্গে প্রচারিত হয়।

এর প্রেক্ষিতে অ্যাডিশনাল আইজিপি সিআইডি মোহাম্মদ আলী মিয়া বিপিএম পিপিএমের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ও নির্দেশনায় সিআইডি এলআইসি’র একটি টিম রহস্য উৎঘাটনের জন্য ঘটনাটির ছায়া তদন্ত শুরু করে।

সিআইডি সরেজমিনে ছায়া তদন্তকালে বাদীসহ ভিকটিমের পরিবারের ও আশপাশের লোকজনদের ব্যাপকভাবে জিজ্ঞাসাবাদসহ তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করে এবং তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ভিকটিম মো. মাসুম বিল্লাহকে হত্যা ও গুমের বিষয়ের সত্যতা নিয়ে সন্দেহের উদ্রেক হয়।

ছায়া তদন্তে জানা যায়, ইতিপূর্বে ভিকটিমের শ্বশুর মো. মাসুম বিল্লাহসহ তার মা ও বাবার বিরুদ্ধে কলাপাড়া, আমলী আদালতে মামলা করেছিলেন।

বিষয়টি সন্দেহকে আরো ঘনীভূত করে পরবর্তীতে অনুসন্ধান টিম তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় রাজধানীর ডেমরা থানা এলাকা থেকে ভিকটিম মো. মাসুম বিল্লাহকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করে।

মাসুম বিল্লাহকে প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বেচ্ছায় আত্মগোপনে থাকার সত্যতা স্বীকার করেন। তিনি আরো জানান যে, তার শ্বশুর তাকেসহ তার বাবা-মার বিরুদ্ধে প্রতারণামূলক আত্মসাৎ ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ এনে আমলী আদালতে মামলা দায়ের করেন।

মামলাটি আদালতের নির্দেশে মহিপুর থানা পুলিশ তদন্ত করে আসামিদের বিরুদ্ধে বাদীর আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারের নিমিত্তে আদালতে পুলিশ রিপোর্ট দাখিল করেন।

তিনি পলাতক থাকায় আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। মো. মাসুম বিল্লাহ শ্বশুরের দায়ের করা মামলার দায় হতে অব্যাহতি পাওয়ার জন্য এবং প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার হীন মানসে পরিবারের সদস্যদের সাথে শলা পরামর্শ করে স্বেচ্ছায় নিজেকে আত্মগোপনে রেখে তার মা কুলসুম বেগম (৪৫)কে দিয়ে শ্বশুর, শাশুড়ি এবং তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করান।

তবে সিআইডির তদন্তকালে সাক্ষ্যপ্রমাণে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও প্রতিহিংসামূলক প্রতীয়মান হয়েছে।

উদ্ধার ভিকটিমকে আদালতে পাঠানোর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।