জালিয়াত চক্রের গ্রেপ্তার তিন সদস্য। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ।

২০১১ সালে মাগুরা জজকোর্ট পরিদর্শনকালে সুপ্রিম কোর্টের মাননীয় বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী (বর্তমানে প্রধান বিচারপতি) কিছু মামলার নথি পরীক্ষা করে দেখতে পান যে, ১১ টি মামলায় সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের জামিন আদেশ, প্রতারণা ও জাল জালিয়াতির মাধ্যমে সৃজন করা হয়েছে।

তিনি বিষয়টি হাইকোর্টের তৎকালীন ডেপুটি রেজিষ্ট্রার মো. মাহফুজুল করিম আকন্দকে অনুসন্ধান করার জন্য নির্দেশ দেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্তপূর্বক মো. রফিক ও মো. দাউদ এলাহীকে অভিযুক্ত করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন, যার প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট বিভাগের তৎকালীন কোর্ট কিপার মো. আব্দুল ওয়ারেছ বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় মামলা দায়ের করেন।

মামলাটি দীর্ঘ ৭ বছরেরও বেশি সময় ধরে থানা পুলিশ ও দুদক তদন্ত করে। পরবর্তীতে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের নির্দেশে মামলাটি সিআইডিতে হস্তান্তর করা হয়।

আলোচিত এই মামলাটি সিআইডিকে তদন্তভার প্রদান করায় সিআইডি প্রধান, অ্যাডিশনাল আইজি, মোহাম্মদ আলী মিয়া, বিপিএম, পিপিএমের সার্বিক নির্দেশনায় সিরিয়াস ক্রাইমের একটি টিম এজাহারনামীয় আসামী মো. দাউদ এলাহী (হাইকোর্ট বিভাগের সাবেক জমাদার) ঘটনার সঙ্গে জড়িত তদন্তে প্রাপ্ত আসামী শেখ আব্দুল মাজেদ (সাবেক কারারক্ষী) ও আশরাফুজ্জামান ওরফে রনিকে তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় গত ১৩ ফেব্রুয়ারি রাত আনুমানিক সাড়ে ৩টার সময় মাগুরা থেকে গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তার আসামী মো. দাউদ এলাহীকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তিনি ঘটনার সময়ে মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগের জমাদার হিসেবে কর্মরত থাকাকালে একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক ও জালিয়াত চক্র গড়ে তোলেন। এই চক্র মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিদের নামে ভুয়া জামিন আদেশ সৃজন করে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মামলার বিশেষ করে সাজাপ্রাপ্ত আসামীদের অর্থের বিনিময়ে জামিন পাইয়ে দেয়ার কাজ করতেন।

জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান যে, ধৃত আসামী শেখ আব্দুল মাজেদ (সাবেক কারারক্ষী), আশরাফুজ্জামান ওরফে রনি এবং এজাহারনামীয় পলাতক আসামীসহ অন্যদের সহযোগিতায় দীর্ঘদিন ধরে গুরুত্বপূর্ণ ও সাজাপ্রাপ্ত মামলার আসামীদের জামিন আদেশ সৃজন করে প্রতারণা করে আসছেন।

ওই জালিয়াত চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত আরো আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।