কনস্টেবল রবিউলকে পুরস্কৃত করছেন আরএমপির পুলিশ কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিরাজগঞ্জ-৪ আসনের একটি ভোটকেন্দ্রে দুর্বৃত্তরা হামলা করলে আরএমপির কনস্টেবল রবিউল একাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে মুখোমুখি দাঁড়িয়ে যান। তাঁর অসম সাহসিকতায় সেদিন ভোটকেন্দ্র দখল করতে ব্যর্থ হয় দুর্বৃত্তরা। কনস্টেবল রবিউলকে এ বীরত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ সম্মাননা স্মারক প্রদান করেন আরএমপির পুলিশ কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার। খবর আরএমপি নিউজের।

রোববার (২৮ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৯টায় রাজশাহী পুলিশ লাইনস ড্রিল শেডে আরএমপির মাসিক কল্যাণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে আরএমপির কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার বীরত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ কনস্টেবল মো. রবিউল আউয়ালকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করেন।

এ সময় পুলিশ কমিশনার বলেন, দেশের যেকোনো প্রয়োজন ও সংকটে পুলিশ সদস্যরা পেশাগত যোগ্যতা, দক্ষতা এবং সাফল্যের স্বাক্ষর রেখে আসছেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে রবিউলের অসম সাহসিকতায় বাংলাদেশ পুলিশ সর্বত্র প্রশংসিত হয়েছে। তাঁর এই বীরত্বপূর্ণ কাজে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ গর্বিত।

অনুষ্ঠানে কনস্টেবল রবিউল ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতার বর্ণনা করেন।

উল্লেখ্য, কনস্টেবল রবিউল আউয়াল দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ডিউটি করার জন্য রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে সিরাজগঞ্জ জেলায় যান। সেখানে সিরাজগঞ্জ-৪ আসনের পঞ্চক্রোশী ইউনিয়নের রামকান্তপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্র উৎসবমুখর পরিবেশে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ চলছিল। এই কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করছিলেন কনস্টেবল রবিউল আউয়াল। সকাল ১০টায় দিকে দুর্বৃত্তরা ভোটকেন্দ্রের বাইরে দুটি ককটেল নিক্ষেপ করে। একটি বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয়। এ সময় ভোট গ্রহণ কর্মকর্তারা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন। ককটেল বিস্ফোরণের সময় ভোট দিতে আসা লোকজন দ্রুত পালিয়ে যান।

এরপর বেলা ১১টায় ৩০-৩৫ জন দুর্বৃত্ত রামদা, হাঁসুয়া ও লাঠিসোঁটা নিয়ে কেন্দ্রের ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করে। এ সময় ওই কেন্দ্রে দায়িত্বে থাকা রবিউল একাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হামলাকারীদের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে যান। এদিকে আনসার সদস্যরাও আড়ালে চলে যান। হামলাকারীদের কেন্দ্রে না ঢোকার জন্য রবিউল বারবার সতর্ক করতে থাকেন। উত্তেজনা বাড়তে থাকলেও তিনি পেশাদারত্ব দেখিয়ে তাঁর অবস্থান থেকে সরে যাননি।

এ সময় হামলাকারীরা রবিউলের প্রতিরোধের মুখে পিছু হটতে বাধ্য হয়। তারা বাইরে থেকে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। এতে নির্বাচনী কাজে ব্যবহৃত মাইক্রোবাসের চালক আহত হন। এভাবে তিনি প্রবল সাহসিকতা দেখিয়ে হামলাকারীদের কিছু সময় ঠেকিয়ে রাখেন। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ, বিজিবি ও র‌্যাব সদস্যরা ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত হয়। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ৪ জনকে আটক করে। রবিউলের সাহসী ভূমিকায় এলাকাবাসী ভূয়সী প্রশংসা করেন।

রবিউল আউয়ালের বীরত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ সিরাজগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার তাঁকে আর্থিক পুরস্কার প্রদান করেন।