আন্দামান সাগরে একটি লঘুচাপের সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি নজর রাখছেন আবহাওয়াবিদেরা। এটি ঘনীভূত হয়ে নিম্নচাপ এবং পরে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ পেতে পারে বলে তাঁদের ধারণা।

বাংলাদেশ উপকূল থেকে ওই লঘুচাপের অবস্থান এখনো যথেষ্ট দূরে; ঘূর্ণিঝড় হোক বা না হোক, এর প্রভাবে তাপমাত্রা সামান্য বাড়বে, এই ডিসেম্বরে বৃষ্টিও হতে পারে। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।

আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, হেমন্তের শেষ সময়ে এসে বৃষ্টির রেশ কেটে গেলেই পৌষের শুরুতে জেঁকে বসবে শীত।

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় বুধবার দেশের সর্বনিম্ন ১২.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। শ্রীমঙ্গলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৩.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের অধিকাংশ এলাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৫ থেকে ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যেই ছিল। আর কক্সবাজারে ৩২.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।

আবহাওয়াবিদ মো. হাফিজুর রহমান বলেন, ‘মধ্য আন্দামান সাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় যে লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে, সেটা আরও ঘনীভূত হয়ে পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। এর প্রভাবে কয়েক দিন পরে বৃষ্টির আভাস রয়েছে। তাপমাত্রা কয়েক দিন কম ছিল, ফের বাড়বে কয়েক দিন।’
এ আবহাওয়াবিদ বলেন, লঘুচাপটি আরও ঘনীভূত হয়ে বৃহস্পতিবার নিম্নচাপে এবং শুক্রবার বা শনিবারের দিকে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেওয়ার আভাস পাচ্ছেন তাঁরা।

নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে এর নাম হবে ‘জাওয়াদ’। এটি সৌদি আরবের দেওয়া নাম।

আরব সাগর ও বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেয় বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার সাইক্লোন-সংক্রান্ত আঞ্চলিক সংস্থা এসকাপ। এই অঞ্চলের ১৩টি দেশের দেওয়া নামের তালিকা থেকে পর্যায়ক্রমে নতুন নতুন ঘূর্ণিঝড়ের নাম ঠিক করা হয়।

হাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমরা পর্যবেক্ষণ করে পরবর্তী পূর্বাভাস জানাব। ঝড়ের প্রভাব কেটে গেলে বৃষ্টি শেষে জেঁকে বসবে শীত।’

এখন পর্যন্ত যে তথ্য মিলেছে, তাতে ঘূর্ণিঝড় হলে সেটি ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ ও ওডিশা উপকূলের দিকে যেতে পারে বলে মনে করছেন আবহাওয়াবিদেরা।

সবশেষ সেপ্টেম্বরে ওডিশা উপকূলে আঘাত হানে ঘূর্ণঝড় ‘গুলাব’। আর মে মাসে ‘ইয়াস’ ওই উপকূলে আঘাত হানে। করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে গত বছরের মে মাসে বাংলাদেশে যে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হেনেছিল, তার নাম ছিল ‘আম্পান’।

হেমন্তের মাঝামাঝি সময়েও সাগরে একটি নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়েছিল। নভেম্বরের প্রথমার্ধে ওই নিম্নচাপের সময় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে কয়েক দিন শীতালু আমেজ বয়ে যায়। তবে পরে তাপমাত্রা বেড়ে যায় কিছুটা।
আবহাওয়ার দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ডিসেম্বর মাসের শেষার্ধে দেশের উত্তর, উত্তর পূর্বাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে এক থেকে দুটি মৃদু শৈত্যপ্রবাহ (সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮-১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) এবং মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ (৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) বয়ে যেতে পারে।