চুয়াডাঙ্গা থানার অভিযানে গ্রেপ্তার আসামি। ছবি: পুলিশ নিউজ

চার বছরের শিশুকে খাবারে বিষ মিশিয়ে হত্যাচেষ্টার মামলায় প্রধান আসামিসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে চুয়াডাঙ্গা সদর থানা-পুলিশ।

পুলিশ জানায়, বাদী চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদার রুশিয়া খাতুন (২৭), ছয় বছর আগে আসামি মো. শাকিলকে (৩৫) বিয়ে করেন। তাঁদের ফাতেমা ওরফে মারিয়া নামের ৪ বছরের মেয়েসন্তান ছিল।

আসামি প্রায় দেড় বছর আগে সাংসারিক মনোমালিন্যের কারণে বাদীকে ডিভোর্স দিয়ে লিমা খাতুন (১৯) নামের নারীকে বিয়ে করেন।

বিচ্ছেদের পর বাদী তাঁর প্রাপ্য দেনমোহর ও মেয়ের খোরপোষ দাবি করে চুয়াডাঙ্গা আদালতে আসামির নামে মামলা করেন। আদালতে ১৮ জুলাই টাকা প্রদানের দিন ধার্য থাকায় বাদী ও তাঁদের মেয়ে ফাতেমা ওরফে মারিয়াকে (৪) নিয়ে চুয়াডাঙ্গা আদালতে হাজির হন। ওই দিন আসামিও আদালতে হাজিরার দিন থাকায় কোর্ট এলাকায় উপস্থিত হন।

মামলায় হাজিরা শেষ করে বেলা ১টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর থানাধীন কোর্টপাড়ায় আদালত চত্বরের উকিলবারের পুরাতন ভবনসংলগ্ন সীমানাপ্রাচীরের কাছে মেয়ে ফাতেমা ওরফে মারিয়াকে (৪) ডেকে কোলে তুলে ২ নম্বর আসামির কাছে নিয়ে যান আসামি শাকিল।

সে সময় দুই আসামি বাদীর মেয়েকে আদর করতে করতে চোখের আড়ালে নিয়ে গিয়ে তাদের সঙ্গে থাকা বিষ মেশানো চিপস এবং কোমল পানীয় স্পিড খাইয়ে দেয়। পরবর্তী সময়ে বাদী মেয়েকে কাছে পাওয়ার পরপরই অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং মেয়ের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় দ্রুত তাকে নিয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে যায়। ওই সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক মেয়েকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চিকিৎসা প্রদান করেন।

শিশুটি আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে পরের দিন উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। তাতেও মেয়ের অবস্থা উন্নত না হওয়ায় ফের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ থেকে ২৫ জুলাই তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে আনা হয়। ওই দিন বাদী চুয়াডাঙ্গা থানায় হাজির হয়ে মো. শাকিল ও তাঁর স্ত্রী লিমা খাতুনের নামে হত্যাচেষ্টা মামলা করেন। পরের দিন সকাল সাড়ে ৬টায় বাদীর মেয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।

মামলার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁদের আদালতে সোপর্দ করা হয়।
আদালতে মামলায় ধারা সংযোজনের আবেদন করা হয়। মামলার তদন্তকার্য চলমান।