পুলিশের হেফাজতে গ্রেপ্তার তিন ধর্ষক। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) যশোর এক গৃহবধূকে ধর্ষণের ঘটনায় তিন ধর্ষককে গ্রেপ্তার করেছে।

জানা গেছে, নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার ওই গৃহবধূ আসামি বাবু মোল্যার দোকান থেকে বাকিতে মালামাল কিনতেন। একপর্যায় আসামির দোকানে দেড় হাজার টাকা বাকি হয়ে যায়। পরবর্তীতে গৃহবধূ আসামির টাকা পরিশোধ করতে না পারলে গত ২৭ জুলাই রাত ৮টার সময় বাবু গৃহবধূর বাড়িতে পাওনা টাকা আদায়ের জন্য যান। সেই সময় বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে বাবু গৃহবধূকে ধর্ষণ করেন। এ সময় গৃহবধূর ডাক চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে। কিন্তু বিষয়টি এলাকায় জানা জানি হলে গৃহবধূর শাশুড়ি স্থানীয় মেম্বার ২নং আসামি রাসেল মোল্যার কাছে অভিযোগ করেন এবং ধর্ষণের বিষয়ে থানায় অভিযোগ করতে চান। তখন আসামি রাসেল মোল্যা বাদীর শাশুড়িকে থানায় অভিযোগ করতে নিষেধ করেন এবং আসামি বাবুকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করেন। আসামি বাবু জরিমানাকৃত ৭৪ হাজার টাকা রাসেল মোল্যার কাছে দেন। ওই জরিমানার টাকা থেকে রাসেল মোল্যা গৃহবধূকে ৫০ হাজার টাকা দেন। পরবর্তীতে গত ৪ আগস্ট সকাল অনুমান সাড়ে ১০টার সময় আসামি রাসেল মোল্যা গৃহবধূকে ফোন করে জরিমানার বাকি টাকা নেওয়ার জন্য চাকুলিয়া হাট মিঠাপুর গ্রামের বলাডাঙ্গা ব্রীজের কাছে আসতে বলেন। রাসেল মোল্যার কথামতো গৃহবধূ সেখানে পৌঁছালে রাসেল মোল্যা ও রাব্বি নামে আরেকজন মোটরসাইকেলে তাকে নড়াইল শহরের একটি বাড়িতে নিয়ে যান। সেখানে রাসেল মোল্যা গৃহবধূকে ধর্ষণ করেন। পরদিন ভোরে আসামি রাব্বি গৃহবধূকে ধর্ষণ করেন ।
পরবর্তীতে গৃহবধূ ঘটনার বিষয়ে পিবিআই যশোর কার্যালয়ে হাজির হয়ে পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। পুলিশ সুপার পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মো. আজিজুল হককে বিষয়টি ছায়া তদন্তের নির্দেশ দেন। নির্দেশ মোতাবেক পিবিআই যশোর বাদীর লিখিত অভিযোগটি তদন্তকালে আসামিদের বিরুদ্ধে আমলযোগ্য অপরাধের সাথে জড়িত থাকার সত্যতা পায়।

এরপর পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদারের বিপিএম (বার), পিপিএম, সঠিক তত্ত্বাবধান ও দিক নির্দেশনায়, পিবিআই যশোর জেলা ইউনিটের ইনচার্জ পুলিশ সুপার রেশমা শারমিনের নেতৃত্বে একটি চৌকস টিম ২১ নভেম্বর রাত ৮টার সময় আসামি বাবু মোল্যা, রাব্বি ও রাসেল মোল্যাকে মিঠাপুর হাট বাজার আসামি বাবু মোল্যার চায়ের দোকান থেকে গ্রেপ্তার করে। তারা গৃহবধূকে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছেন।

পরে গৃহবধূ নিজে বাদী হয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে লোহাগড়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।

আসামিদের গতকাল ২২ নভেম্বর নড়াইলের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হয়।