পুলিশের হেফাজতে গ্রেপ্তার ডাকাত দলের সদস্যরা। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল থানাধীন সাতগাঁও চা-বাগানের অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজারের বাংলোতে ডাকাতির ঘটনায় লুণ্ঠিত মালপত্রসহ আন্তজেলা ডাকাত দলের ৪ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

শ্রীমঙ্গল থানার একটি টিম ২৩ নভেম্বর সারা দিন কুমিল্লা জেলার কোতোয়ালি থানা এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে সবুজ মিয়া (৪৭), বশির আহমদ (৩৫), সফিক উদ্দিন (৪০) ও মিঠুন দাস (২৫) নামে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করে। তাঁদের কাছ থেকে সাতগাঁও চা-বাগানের বাংলো থেকে লুট করা স্বর্ণালংকার, টাকা এবং অন্য মালপত্র উদ্ধার করা হয়েছে।

ডাকাতির সংবাদ পাওয়ামাত্রই শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইনচার্জের নেতৃত্বে থানা-পুলিশ মাঠে কাজ শুরু করে। ডাকাতির ঘটনার রহস্য উদঘাটন, আসামিদের গ্রেপ্তার এবং লুষ্ঠিত মালপত্র উদ্ধারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আমিনুল ইসলাম এবং শ্রীমঙ্গল থানার একটি চৌকস দল অভিযান শুরু করে। গোপন সোর্স এবং তথ্যপ্রযুক্তির সহযোগিতায় কুমিল্লা জেলার কোতোয়ালি থানার অন্তর্গত ২ নং দুর্গাপুর ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর গ্রামের হাজি মোস্তফার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ডাকাতির ঘটনায় জড়িত ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার ৩ জন সাতগাঁও চা-বাগানের সহকারী ব্যবস্থাপকের বাংলোতে ডাকাতির ঘটনায় জড়িত ছিল বলে স্বীকার করেন।

আসামি সবুজ মিয়ার কাছ থেকে ডাকাতির ঘটনায় লুষ্ঠিত ৮ আনার ১টি স্বর্ণের চেইন ও ৩ হাজার টাকা, বশির আহমেদের কাছ থেকে ২ আনার ১টি স্বর্ণের আংটি, ১টি সিলভার রঙের নেভিফোর্স ব্র‍্যান্ডের হাতঘড়ি ও ৩ হাজার টাকা এবং সফিক উদ্দিনের কাছ থেকে ১টি গোল্ডেন কালারের মিমা ব্র‍্যান্ডের হাতঘড়ি ও ৩ হাজার টাকা জব্দ করা হয়।

আসামিরা জানান, ডাকাতির ঘটনায় লুন্ঠিত স্বর্ণালংকার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর থানাধীন ধরমন্ডল বাজারের শুভা শিল্পালয় নামক জুয়েলারি দোকানে বিক্রি করেছেন। এ তথ্যের ভিত্তিতে ডাকাতির ঘটনায় লুণ্ঠিত মালপত্র উদ্ধারের লক্ষ্যে গ্রেপ্তার আসামিরা নাসিরনগর থানাধীন ধরমন্ডল বাজারের শুভা শিল্পালয় জুয়েলারি দোকানে অভিযান চালিয়ে দোকানমালিক স্বর্ণালংকার ক্রয়কারী মুজিবর রহমানকে (৪৫) গ্রেপ্তার করতে গেলে তাঁকে পাওয়া যায়নি। পরে তাঁর সহযোগী দোকান কর্মচারী মিঠুন দাসকে (২৫) আটক করা হয়।

গ্রেপ্তার আসামিদের দেওয়া তথ্য এবং তাঁদের শনাক্তমতে আটককৃত মিঠুন দাসকে লুন্ঠিত স্বর্ণালংকারের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদে আসামিদের কাছ থেকে ডাকাতির ঘটনায় লুণ্ঠিত স্বর্ণ কেনার কথা স্বীকার করেন। পরে সেখান থেকে ১টি সাদা রঙের কাগজের প্যাকেটে রক্ষিত অবস্থায় ৮ আনার ১টি স্বর্ণের চেইন, ২ আনার ১ জোড়া স্বর্ণের কানের দুল, ২ আনার ১ জোড়া স্বর্ণের কানের রিং জব্দ করা হয়।

গ্রেপ্তার আসামিরা আন্তজেলা ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য। তাঁদের বিরুদ্ধে একাধিক ডাকাতির মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তার আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সাতগাঁও চা-বাগানে সহকারী ব্যবস্থাপকের বাংলোতে ডাকাতির ঘটনার জড়িত থাকার বিষয়ে স্বীকার করেছেন।

উল্লেখ্য, ২২ নভেম্বর দিবাগত রাতে মুখোশ পরে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে একটি ডাকাত দল সাতগাঁও চা-বাগানের অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার আব্দুল মতিনের বাংলোতে প্রবেশ করে আব্দুল মতিন এবং তাঁর স্ত্রী ও অন্য সদস্যদের হাত-পা বেঁধে ৫ ভরি স্বর্ণালংকার, ৮০ হাজার টাকা, মোবাইল ফোন এবং অন্য মালপত্র লুট করে। এ ঘটনায় শ্রীমঙ্গল থানায় একটি ডাকাতি মামলা দায়ের করা হয়।