বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গুয়েন লুইস সোমবার সকালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। ছবি: পিএমও

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের ভাষানচরে স্থানান্তর করতে বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গুয়েন লুইসের সহায়তা চেয়েছেন।

আজ সোমবার সকালে গুয়েন লুইস মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এলে শেখ হাসিনা এ আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রীর স্পীচ রাইটার এম. নজরুল ইসলাম মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছেন, ‘শেখ হাসিনা বলেছেন, যেহেতু খুব শিগগির রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর কোনো নিশ্চয়তা নেই, তাই রোহিঙ্গাদের আরো উন্নত জীবনযাপনের জন্য ভাষানচরে স্থানান্তর করা উচিত এবং জাতিসংঘ বিষয়ে সহযোগিতা করতে পারে।’

বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর স্পীচ রাইটার এম. নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। শেখ হাসিনা বলেন, রোহিঙ্গারা বর্তমানে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ঘনবসতিপূর্ণ জীবনযাপন করছেন। তিনি বলেন, ‘যদি রোহিঙ্গাদের বসবাসের জন্য জীবিকার ব্যবস্থা সম্পন্ন ভাষানচরে স্থানান্তর করা যায়, তাহলে তারা বসবাসযোগ্য পরিবেশে মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপন করতে পারবেন। কারণ, এখানে লাখেরও বেশি লোকের আবাসনের ব্যবস্থা রয়েছে।’

শেখ হাসিনা আরো বলেন, ভাষানচরে উন্নতমানের জীবন যাপন ও রোহিঙ্গা শিশুদের নিজস্ব ভাষায় শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানবিক কারণে বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়া হলেও তারা এখন বাংলাদেশের জন্য বড় ধরনের বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার পর থেকে সহযোগিতার জন্য জাতিসংঘকে ধন্যবাদ জানান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং জাতিসংঘ এ সহায়তা অব্যাহত রাখবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

বৈঠকে শেখ হাসিনা বলেন, রোহিঙ্গারা কক্সবাজারে সামাজিক সমস্যা সৃষ্টি করছে। তাদের মধ্যে অনেকেই মাদক, অস্ত্র ও মানব পাচারে জড়িয়ে পড়েছে। তিনি আরো বলেন, রোহিঙ্গারা অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব এবং জঙ্গিবাদেও জড়িত। কক্সবাজারে রোহিঙ্গারা স্থানীয়দের চেয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠে পরিণত হয়েছে।
বৈঠকে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে নারীর ক্ষমতায়ন ও নারী শিক্ষা নিশ্চিত করার পাশাপাশি এমডিজি’র লক্ষ্য অর্জন ও এসডিজি অর্জনে কাজ করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করেন। গুয়েন লুইস আরও বলেন, বাংলাদেশকে জলবায়ু পরিবর্তন ও কোভিড-১৯ পরবর্তী পরিস্থিতিতে নারীদের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতসহ কিছু চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে উঠতে হবে।

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এ সময় উপস্থিত ছিলেন।