রাজশাহীর মতিহার থানার পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার চোর চক্রের ৫ সদস্য

রাজশাহীর প্রকৌশল প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের হল রুম থেকে ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোন চুরির ঘটনায় সংঘবদ্ধ চোর চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে আরএমপি’র মতিহার থানা পুলিশ। এসময় গ্রেপ্তারকৃতদের থেকে ৯ টি চোরাই ল্যাপটপ ও ৮টি মোবাইল ফোন উদ্ধার হয়। খবর আরএমপির।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন মো. আরিফুল ইসলাম আরিফ (২৫), মো. জয় হোসেন (২২), মো: সাকির হোসেন সুইট (২৫), মো. শফিউর রহমান শাফি (২০) ও মো. তৌশিক রহমান সিয়াম (১৭)।

গতকাল বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) দুপুর ২টায় আরএমপি সদরদপ্তর কনফারেন্স রুমে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার জনাব মো. আবু কালাম সিদ্দিক এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান।

উদ্ধার করা ৮টি চোরাই মোবাইল ফোন

জানা যায়, গত ৮ জুন ভোর সাড়ে ৫ টায় রাজশাহী প্রকৌশল প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের টিনশেড হল রুম হতে ৩টি ল্যাপটপ ও ৪টি মোবাইল ফোন চুরি হয়। রুয়েটের ছাত্র মো. লুৎফুল্লাহ হিল কবির চৌধুরীর লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মতিহার থানায় একটি চুরির নিয়মিত মামলা হয়।

মামলা হওয়ার পর রুজু আরএমপি’র পুলিশ কমিশনার জনাব মো. আবু কালাম সিদ্দিকের নির্দেশে মতিহার থানার পুলিশের একটি টিম চুরি হওয়া ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোন উদ্ধার-সহ আসামিদের অবস্থান শনাক্ত করে গ্রেপ্তার অভিযান শুরু করে।

টিমের সদস্যরি রুয়েটের সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান চালিয়ে আসামি আরিফুল ইসলাম আরিফকে গ্রেপ্তার করেন। এসময় তার কাছ থেকে ১ টি চোরাই মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

আরিফের দেওয়া তথ্যমতে আসামি মো. জয় হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। জয়ের দেওয়া তথ্যমতে কাশিয়াডাঙ্গা থানার হড়গ্রাম কাঁচা বাজারে অবস্থিত কম্পিউটার এক্সেসরিজের দোকানে অভিযান পরিচালনা করে আসামি মো. সাকির হোসেন সুইট ও মো. শফিউর রহমান শাফিকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় দোকান থেকে রুয়েট থেকে চুরি হওয়া ২টি ল্যাপটপ এবং আরো ৫টি চোরাই ল্যাপটপ উদ্ধার হয়।

আসামি সাকির হোসেনকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তার দোকানের কর্মচারী আসামি মো. শফিউর রহমান ২টি চোরাই ল্যাপটপ আরমানের কাছে বিক্রি করেছে এবং ল্যাপটপ ২টি এসএ পরিবহন রাজশাহীর মাধ্যমে ঢাকায় পাঠানোর জন্য বুকিং করেছে। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এসএ পরিবহন রাজশাহী শাখা থেকে ২টি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের দেওয়া তথ্যমতে অপর আসামি তৌশিক রহমান সিয়ামকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ২টি অ্যান্ড্রয়েড ফোন উদ্ধার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা রাজশাহী মহানগরীর সক্রিয় ল্যাপটপ এবং মোবাইল ফোন চোর চক্রের সদস্য। তারা রুয়েট ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল, মেস-সহ বাসা বাড়িতে ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোন চুরি করে কাশিয়াডাঙ্গা থানাধীন হড়গ্রাম কাঁচা বাজারের কম্পিউটার এক্সেসরিজ নামক দোকানে নিয়ে যান। এরপর সেখানে মোবাইল ও ল্যাপটপের লক খুলে বিক্রয় ডট কমে বিজ্ঞাপন দিয়ে বিক্রি করে থাকেন। তারা দীর্ঘদিন ধরে রাজশাহী মহানগরীতে এই ধরনের কর্মকাণ্ড করে আসছে বলে জানান।

এ পর্যন্ত রুয়েটের হল থেকে চুরি হওয়া ৩টি ল্যাপটপ ও ৩টি মোবাইল ফোন সেট সহ সর্বমোট চোরাই ৯ টি ল্যাপটপ এবং ৮ টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

রুয়েট, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হলসহ বিভিন্ন মেস থেকে যাদের ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোন চুরি হয়েছে তাদের উপযুক্ত প্রমাণ নিয়ে মতিহার থানায় যোগাযোগ করার জন্য সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে।