মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে পদক্ষেপ নিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এই যুদ্ধের কারণে গোটা বিশ্বকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। খবর বাসসের।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের কমিশন ফর হোম অ্যাফেয়ার্স ইভা জোহানসনের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করতে এলে তিনি এ আহ্বান জানান। 

বৈঠক শেষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

বৈঠকে রোহিঙ্গা ও জলবায়ু পরিবর্তনসহ অভিবাসনসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা হয়।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশের জন্য একটি বড় ধরনের বোঝা এবং নতুন শিশু জন্মগ্রহণের সাথে সাথে প্রতিদিন এই সংখ্যা বাড়ছে।’

ইইউ প্রতিনিধিদলের নেতা ইবা জোহানসন বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে ইইউ বাংলাদেশের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখবে।

তিনি আরও বলেন, ইইউ বর্তমানে ৪৫ লাখ ইউক্রেনীয় শরণার্থীকে আশ্রয় দিচ্ছে।
বৈঠকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাংলাদেশি অভিবাসীদের ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়ার বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হয়।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এই অভিবাসন বন্ধে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। 

ইইউ নেতা বলেন, বৈধ অভিবাসীরা একটি জয় জয় পরিস্থিতি সৃষ্টি করে পারস্পারিক সুবিধা নিশ্চিত করতে পারে। 

এ সময় ইইউ প্রতিনিধিদল জানতে চায় যে, বাংলাদেশ কীভাবে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলা করে।

জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ নিজস্ব অর্থায়নে বিভিন্ন অভিযোজন ও প্রশমন কর্মসূচি গ্রহণ করে বিধায় আমরা যেকোনো ধরনের দুর্যোগ মোকাবিলা করতে সক্ষম।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ধনী দেশগুলো- যারা বৈশ্বিক উষ্ণায়নের জন্য দায়ী, তারা জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোকে তাদের প্রতিশ্রুত অর্থ দেয়নি।
তিনি আরও বলেন, ‘ধনী দেশগুলো তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেনি।’ 

বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়নের জন্য ইইউ প্রতিনিধিদলের নেতা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করেন।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, আগামী বছর বাংলাদেশ ও ইইউ তাদের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন করতে যাচ্ছে।

নারী ক্ষমতায়নের ব্যাপারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার নারীর ক্ষমতায়নকে সর্বাগ্রে প্রাধান্য দিচ্ছে।

সরকারপ্রধান আরও বলেন, ‘আমরা প্রতিটি খাতে নারী কর্মীদের নিয়োগ দিচ্ছি এবং তারা খুব ভালো কাজ করছেন।’

শেখ হাসিনা আরও বলেন, তাঁর সরকার তৃণমূল পর্যায়ে উন্নয়ন নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ‘তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত উন্নয়ন নিশ্চিত করা আমাদের প্রধান লক্ষ্য।’

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অ্যাম্বাসেডর-অ্যাট-লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস ও ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হুটেলি এ সময় উপস্থিত ছিলেন।