সিএমপির বাকলিয়া থানার অভিযানে গ্রেপ্তার চারজন ও উদ্ধার হওয়া স্বর্ণালংকার। ছবি: সিএমপি

যাত্রীবেশে প্রতারণার মাধ্যমে স্বর্ণালংকার আত্মসাতের ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) বাকলিয়া থানা-পুলিশ।

ওই চারজনের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে স্বর্ণের কানের দুল ও নকল স্বর্ণের বার।

বাকলিয়া থানা-পুলিশ জানায়, মামলার বাদী স্বামী, ছেলে-মেয়েসহ চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে থাকেন। বাদীর স্বামী সীতাকুণ্ডের জঙ্গল ছলিমপুর এলাকার একজন ব্যবসায়ী।
১৮ এপ্রিল বাদী ও তাঁর স্বামী ভোটার আইডি কার্ড করার জন্য পটিয়ায় গ্রামের বাড়িতে যান। কাজ শেষে দুপুরে সীতাকুণ্ডের উদ্দেশে একই তারিখ বেলা ৩টা ২৫ মিনিটে বাকলিয়া থানাধীন নতুন ব্রিজ গোলচত্বরে পৌঁছালে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক তাদের কোথায় যাবেন জিজ্ঞাসা করেন।

ওই সময় অটোরিকশায় আগে থেকে যাত্রীবেশে পেছনের সিটে বসে থাকা দুজন বিবাদীর মধ্যে একজন নেমে গিয়ে বাদী ও তাঁর স্বামীকে কৌশলে বসার সুযোগ করে দেন।

চালক অটোরিকশাটি নিয়ে বেলা সাড়ে ৩টার দিকে বাকলিয়া থানাধীন শাহ আমানত সংযোগ সেতুর উত্তর পাশে মীর ফিলিং স্টেশনের বিপরীতে পাকা রাস্তার ওপর পৌঁছান। সে সময় রাস্তার ওপর একটি মানিব্যাগ পড়ে আছে বলে গাড়িটি থামান তিনি। অটোরিকশার সামনের সিটে বসা এক বিবাদী অটোরিকশা থেকে দ্রুত নেমে মানিব্যাগটি রাস্তা থেকে হাতে নিয়ে পেছনের সিটে থাকা অপর বিবাদীকে দেন।

ওই বিবাদী মানিব্যাগটির ভেতর থেকে একটি স্বর্ণের বার এবং এক টুকরো কাগজ বের করে দম্পতিকে দেখান। মানিব্যাগ থেকে বের করা কাগজে বারটিতে ২২ ক্যারেটের স্বর্ণ লেখা আছে বলে তাঁদের পড়ে শোনান। সে স্বর্ণের বার দিয়ে কানের দুল, গলার হার ও এক জোড়া হাতের বালা তৈরি করা যাবে বলেও বাদীকে জানানো হয়।

বাদীর স্বামী বিষয়টি পুলিশকে জানাতে চাইলে বিবাদীরা জানানোর প্রয়োজন নেই বলেন। একপর্যায়ে গাড়িতে থাকা বিবাদীরা রাস্তায় পাওয়া মানিব্যাগ থেকে বের করা বারটি ২২ ক্যারেটের স্বর্ণ এবং সেটি বাদীকে নিতে বিভিন্নভাবে প্ররোচিত করেন। বিবাদীর প্ররোচনায় পড়ে স্বর্ণের বারের পরিবর্তে বাদী তাঁর গলার ১২ আনা ওজনের ১টি স্বর্ণের চেইন ও কানে থাকা ৫ আনা ওজনের ১ জোড়া কানের দুল দিয়ে দেন।

অটোরিকশাটি বহদ্দারহাট পৌঁছালে বাদীর পাশে বসা বিবাদী নেমে যান। চালক বাদী ও তাঁর স্বামীকে ২ নম্বর গেট এলাকায় নামিয়ে দেন। বাদী বাসায় গিয়ে তাঁর মেয়েকে স্বর্ণের বারটি দেখালে তিনি এটি নকল বলে ধারণা করেন। তখন তাঁরা নিশ্চিত হওয়ার জন্য পাশের একটি স্বর্ণের দোকানে যান। স্বর্ণাকার বারটি দেখে তাৎক্ষণিকভাবে বলে দেন যে, এটি স্বর্ণের বার নয়।

এ বিষয়ে বাদীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বাকলিয়া থানায় একটি নিয়মিত মামলা হয়। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে নগরীর বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে ঘটনায় ব্যবহৃত সিএনজিচালিত অটোরিকশা, বাদীর কাছ থেকে আত্মসাৎকৃত ১ জোড়া কানের দুল, সাদা রঙের এক জোড়া শাখা (হাতের বালা), ভ্যানিটি ব্যাগসহ কাগজের টুকরাসহ (এতে ২২ ক্যারেটের ৫ ভরি ওজনের স্বর্ণের নকল বার ছিল) মো. আলাউদ্দিন, মো. নাছির, মো. জসিম উদ্দিন ও হাবিবা সুলতানাকে গ্রেপ্তার করা হয়।