পুলিশি হেফাজতে দুই আসামি। ছবি : বাংলাদেশ পুলিশ

যশোর জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) এবং অভয়নগর থানা-পুলিশের তৎপরতায় মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ভৈরব নদীর তীর থেকে এক যুবকের লাশ উদ্ধারের রহস্য উদ্ঘাটিত হয়েছে। এ ঘটনায় দুই আসামিকে গ্রেপ্তার এবং হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি চাকু জব্দ করা হয়েছে।

সোমবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুর পৌনে ২টার দিকে অভয়নগর থানাধীন নর্থ বেঙ্গল এলাকা থেকে আসামি শান্ত (২১) ও সাকিব মোল্যাকে (২১) গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের বাড়ি নড়াইল সদর থানা এলাকায়।

পুলিশ জানায়, গত রোববার (১৫ জানুয়ারি) বিকেল সোয়া ৩টার দিকে যশোরের অভয়নগর থানাধীন দেয়াপাড়া গ্রামসংলগ্ন ভৈরব নদীর তীর থেকে এক অজ্ঞাতপরিচয় যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়। প্রযুক্তির সহায়তায় তাঁর পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা ব্যর্থ হয়। এক পর্যায়ে তাঁর পকেটে একটি চিরকুট পাওয়া যায়। চিরকুটে থাকা মোবাইল নম্বরে কল দিয়ে জানা যায়, মৃত ব্যক্তির নাম ফরিদ গাজী (২৫)। তাঁর বাড়ি খুলনার কয়রা থানা এলাকায়। যশোরের অভয়নগর থানা এলাকার একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ফরিদের বিরুদ্ধে একটি ধর্ষণ মামলাসহ একাধিক চুরির মামলা আছে।

সোমবার (১৬ জানুয়ারি) নিহত ফরিদের ভাই ফারুক গাজী অভয়নগর থানায় হত্যা মামলা করেন। চাঞ্চল্যকর ও ক্লুলেস এই ঘটনাটি তদন্ত করতে মাঠে নামে অভয়নগর থানা-পুলিশ ও ডিবি। তদন্তের এক পর্যায়ে সোমবার দুপুরে অভয়নগর থানাধীন নর্থ বেঙ্গল এলাকা থেকে দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনাস্থল থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকু জব্দ করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, কারাগারে আসামি শান্তর সঙ্গে ভুক্তভোগী ফরিদের পরিচয় হয়। জেল থেকে বের হয়ে ফরিদের কথা মতো কাজের জন্য নড়াইল থেকে অভয়নগরে আসেন শান্ত ও সাকিব। গত ২২ ডিসেম্বর নর্থ বেঙ্গল এলাকার একটি ভাড়া বাসায় ওঠেন তাঁরা। পাশাপাশি জাহাজে কাজ শুরু করেন। কিন্তু শান্ত ও সাকিবের উপার্জনের টাকা থাকা-খাওয়ার কথা বলে কেটে নেন ফরিদ। সেই টাকা চাইতে গেলে তাঁদের ওপর চড়াও হন ফরিদ। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। এ কারণে ফরিদকে হত্যার পরিকল্পনা করেন তাঁরা। পরিকল্পনা অনুযায়ী, সেলু মেশিন চুরির প্রলোভন দেখিয়ে ফরিদকে ঘটনাস্থলে ডেকে আনেন শান্ত ও সাকিব। এক পর্যায়ে চাকু দিয়ে গলা কেটে ফরিদকে হত্যা করেন তাঁরা। পরে চাকুটি বেঙ্গল টেক্সাটাইল মিলের পাশে পুতে এবং রক্তমাখা জামা ভৈরব নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়।

আসামিদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানায় যশোর জেলা পুলিশ।