যশোরে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার দুই অপহরণকারী। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ।

যশোরের চৌগাছা উপজেলা থেকে অপহরণের পাঁচ দিন পর অপহৃতকে উদ্ধার করেছে পুলিশ । গ্রেপ্তার করেছে অপহরণকারী চক্রের দুই সদস্যকে।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়,গত ৩ জুন সকাল সাড়ে ৯টার দিকে চৌগাছা থানাধীন বড় কাবিলপুর বাজারে আবু সাঈদের সার-কীটনাশকের দোকানের সামনে পাকা রাস্তার ওপর থেকে শাহীন (৩২) ও তার শ্যালক ইয়ামিনকে (১৯) আবু সাঈদ, মন্টু, লিটন নামের চোরাকারবারিরা অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে আটকে রাখেন।

পরের দিন ৪ জুন দুপুর সাড়ে ১২টার সময় ইয়ামিন কৌশলে অপহরণকারী চক্রের কাছ থেকে পালিয়ে আসলেও শাহীনকে তারা ৫ দিন ধরে আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতন চালাতে থাকেন।

অপহৃত শাহীনের বাবা এ ব্যাপারে চৌগাছা থানায় লিখিত অভিযোগ করলে থানা তা মামলা হিসেবে গ্রহণ করে।

ঘটনাটি স্পর্শকাতর হওয়ায় জেলার পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার, বিপিএম (বার), পিপিএম মামলাটি ডিবিকে তদন্তের জন্য নির্দেশ দেন।

এরপর জেলা গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জ রুপন কুমার সরকার, পিপিএমের তত্ত্বাবধানে ডিবির এসআই মফিজুল ইসলাম, পিপিএম মামলার তদন্তভার গ্রহণ করে তথ্য প্রযুক্তির সহযোগিতায় অপরাধীদের অবস্থান শনাক্ত করেন।এরপর ডিবির একটি চৌকস টিম নিয়ে ৭ জুন বিকাল ৫টা থেকে ৮ জুন ভোর ৭টা পর্যন্ত চৌগাছা থানার কাবিলপুর, শার্শা, বেনাপোল পোর্ট ও ঝিকরগাছা থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে অপহরণকারী ও চোরাকারবারী চক্রের ২ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেন ।

তাদের স্বীকারোক্তি মতে, বেনাপোল পোর্ট থানাধীন পৌর গেটের পশ্চিম পাশে হক ফিলিং ষ্টেশনের সামনে থেকে অপহৃত শাহীনকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।

আসামিদের হেফাজত থেকে অপহরণকাজে ব্যবহৃত ১টি ডিসকভার মোটরসাইকেল ও ৪টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামিদের মধ্যে আবু সাঈদ ও ভিকটিম শাহীন ও ইয়ামিন আদালতে জবানবন্দি দেন। অপর গ্রেপ্তারকৃত আসামি লিটনকে ৫ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে।

গ্রেফতারকৃত আসামিদের ও ভিকটিমদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, শার্শা মন্টু, লিটন ও তাদের অন্যান্য সহযোগীরা চোরাকারবারের সঙ্গে জড়িত। তারা চৌগাছা কাবিলপুর বাজারের কীটনাশক ব্যবসায়ী আবু সাঈদের মাধ্যমে বিভিন্ন জনকে দিয়ে শাহাজাদপুর সীমান্ত দিয়ে কীটনাশকের প্যাকেটের কথা বলে স্বর্ণ পাচার করতেন।

৩ জুন সকালে আবু সাঈদ ২টি প্যাকেটে ৩ কেজি স্বর্ণ শাহীনকে সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাঠানোর জন্য দেন। শাহীন তার শ্যালক ইয়ামিন ও তার ভাই হুরায়রার(১৪) মাধ্যমে প্যাকেট ২টি সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাঠানোর জন্য শাহাজাদপুর মাঠে উঠলে চোরাকারবারী মন্টু, লিটনের লোক ছিনতাইকারী সেজে দেড় কেজি ওজনের ১টি প্যাকেট ছিনতাই করে আত্মসাৎ করেন এবং নিজেদের অপরাধ লুকানোর জন্য শাহীন ও ইয়ামিনকে অপহরণ করে অজ্ঞাতস্থানে আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতন চালান। অবশেষে ৫ দিন পর ডিবি পুলিশের সহযোগিতায় ভিকটিম শাহীন উদ্ধার হয়।