পুলিশি হেফাজতে আসামিরা এবং উদ্ধার করা মালপত্র। ছবি : বাংলাদেশ পুলিশ

ফরিদপুরের নগরকান্দায় একটি মুরগিবাহী পিকআপ ভ্যানে ডাকাতির রহস্য উদ্ঘাটন করেছে জেলা পুলিশ। এ ঘটনায় চার ডাকাতকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ডাকাতিতে ব্যবহৃত পিকআপ ভ্যান, মুরগি বিক্রির ২৬ হাজার ৫০০ টাকা ও একটি মোবাইল ফোন।

পুলিশি হেফাজতে আসামিরা এবং ডাকাতিতে ব্যবহৃত পিকআপ ভ্যান। ছবি : বাংলাদেশ পুলিশ

বুধবার (২৪ জানুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম পিপিএম জানান, গত রোববার (২১ জানুয়ারি) থেকে মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) পর্যন্ত গাজীপুর ও রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়।

আসামিরা হলেন কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী এলাকার মো. মহসীন (২২), মাদারীপুরের রাজৈর এলাকার সুজন মাতুব্বর সজল (২৪), ফরিদপুরের ভাঙ্গা এলাকার মো. দেলোয়ার হোসেন দেলো ওরফে স্বপন আক্তার (৩৩) এবং গাইবান্ধার পলাশবাড়ী এলাকার মো. আশরাফুল ইসলাম (২১)।

পুলিশ সুপার জানান, গত ১৪ জানুয়ারি ফরিদপুরের নগরকান্দা থানাধীন তালমা ব্রিজ সংলগ্ন মহাসড়কে ডাকাতির কবলে পড়ে মুরগিবাহী একটি পিকআপ ভ্যান। এ সময় অজ্ঞাতপরিচয় ডাকাতরা পিকআপ ভ্যান, ৫০৪টি মুরগি, একটি মোবাইল ফোন ও ৯ হাজার ২০০ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় নগরকান্দা থানায় মামলা করা হয়। তদন্তের এক পর্যায়ে তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় আসামিদের শনাক্ত করা হয়। এরপর গাজীপুর ও ঢাকা মহানগরীর থেকে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তিনি জানান, গত রোববার দিবাগত রাতে গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গী পূর্ব থানাধীন মিরাশপাড়া এলাকা থেকে আসামি মহসীনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর দেওয়া তথ্যে সোমবার সকালে আশরাফুলকে গ্রেপ্তার এবং একটি ফোন উদ্ধার করা হয়। ওই দিন বিকেলে গাজীপুরের জয়দেবপুর থানাধীন বাঘের বাজার থেকে আসামি সুজনকে গ্রেপ্তার এবং ডাকাতিতে ব্যবহৃত পিকআপ ভ্যান উদ্ধার করা হয়। তাঁর দেওয়া তথ্যে একই দিনে গ্রেপ্তার করা হয় অপর আসামি দেলোয়ারকে, উদ্ধার করা হয় মুরগি বিক্রির ২৬ হাজার ৫০০ টাকা।

সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম পিপিএম। ছবি : বাংলাদেশ পুলিশ

আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে পুলিশ সুপার জানান, ডাকাতির উদ্দেশ্যে গত ১৩ জানুয়ারি গাজীপুরের মাওনা থেকে রওনা দেন ডাকাতদলের ছয়জন। প্রথমে মাদারীপুরের টেকেরহাট এবং সেখান থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গায় পৌঁছান তাঁরা। এরপর ডাকাতির উদ্দেশ্যে বিভিন্ন মুরগিবাহী গাড়ি তাড়া করতে থাকেন। এক পর্যায়ে নিজেদের পিকআপ ভ্যান দিয়ে ঘটনাস্থলে আসা মুরগিবাহী একটি পিকআপ আটক করেন আসামিরা। এ সময় মুরগিবাহী পিকআপ থেকে নামিয়ে চালক ও মালিককে মারধর করেন তাঁরা। এক পর্যায়ে মহসীন ও দেলোয়ার মুরগিবাহী পিকআপ নিয়ে পালিয়ে যান। ডাকাতদলের অন্যরা টাকা ও ফোন নিয়ে নিজেদের পিকআপে চড়ে ঢাকায় রওনা দেন। এরপর রাজধানীর কাপ্তানবাজারে এসব মুরগি ১ লাখ ৭৭ হাজার টাকায় বিক্রি করেন।

পুলিশ সুপার আরও জানান, গ্রেপ্তার আসামিদের নগরকান্দা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত অপর আসামিদের গ্রেপ্তার এবং লুণ্ঠিত পিকআপ ভ্যান উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।