পুলিশের হেফাজতে গ্রেপ্তার আসামিরা। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

কিশোরগঞ্জের মিঠামইন থানার পরকীয়ার জেরে এক খুনের মামলার এজাহারনামীয় চারজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মিঠামইন থানার কাটখাল ইউনিয়নের শান্তিপুরে ২৩ জানুয়ারি প্রতিপক্ষের হামলায় মাছ ব্যবসায়ী মো.আব্দুল মালেক (৩৬) নিহত হন। এ ঘটনায় নিহতের ভাই মো. হামিদুর রহমান (৪৫) বাদী হয়ে মিঠামইন থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে তা মামলা হিসেবে তা গ্রহণ করা হয়।
প্রাথমিক তদন্ত ও স্থানীয়ভাবে জানা যায়, ভিকটিম মো. আব্দুল মালেকের স্ত্রী সাহেদা বেগমের (৩৫) সাথে এজাহারনামীয় ২ নং বিবাদী আ. মালেকের দীর্ঘদিনের পরকীয়া সম্পর্ক ছিল। বেশ কিছুদিন ধরে আসামি আ. মালেক ভিকটিমের স্ত্রী সাহেদা বেগমকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে তিনি বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানান। ঘটনার দিন আ. মালেক স্থানীয় একটি বাজারে সাহেদা আক্তারকে মারধর করেন। স্ত্রীকে মারধরের ঘটনাটি জানতে পেয়ে ভিকটিম মো. আব্দুল মালেক এর প্রতিবাদ করেন এবং এর বিচার চেয়ে বিবাদী আ. মালেকের পরিবারের কাছে অভিযোগ দিলে বিবাদীপক্ষের পরিবারের লোকজন এ ঘটনার সুরাহা না করে উল্টো ভিকটিমকে গালমন্দ করে হুমকি-ধমকি দিয়ে তাড়িয়ে দেন। পরে ভিকটিম স্থানীয় লোকজনের কাছে ঘটনাটি জানিয়ে বিচার চাইলে ২ নং বিবাদী তাঁর সহযোগীদের নিয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে দা, লাঠি, লোহার রড ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ভিকটিমের বাড়িতে ঢুকে ভিকটিমকে এলোপাতাড়ি কিল, ঘুষি ও লাথি মেরে জখম করেন। ভিকটিমের স্ত্রী এগিয়ে এলে আসামিরা তা&কেও মারধর করেন। একপর্যায়ে বিবাদীরা মিলিতভাবে ভিকটিমকে মাটিতে শুইয়ে গলাটিপে ধরলে তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। ভিকটিমের স্ত্রীর চিৎকারে বাদীসহ অন্য লোকজন এগিয়ে এলে আসামিরা হুমকি দিয়ে পালিয়ে যান। মামলার বাদী ও ভিকটিমের স্ত্রী অটোরিকশাযোগে ভিকটিমকে চিকিৎসার জন্য কাটখাল বাজারে নেওয়ার পথে বিবাদীরা অটোরিকশার গতিরোধ এবং ভিকটিমকে পুনরায় মারধর করেন। অবশেষে মিঠামইন থানাধীন কাটখাল বাজারে পল্লিচিকিৎসক নুরুল আমিনের কাছে ভিকটিমকে নিয়ে গেলে তিনি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ভিকটিমকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় মিঠামইন থানায় হত্যা মামলা দায়েরের পর কাটখাল তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মুহাম্মদ শাহিদুল ইসলামকে তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োজিত করা হয়।

পরে মিঠামইন থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আহসান হাবীব, পুলিশ পরিদর্শক মুহাম্মদ শাহিদুল ইসলাম ও সঙ্গীয় অফিসার-ফোর্সের সহায়তায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ২৫ জানুয়ারি রাত সোয়া ১১টার সময় হবিগঞ্জ জেলার আজমেরীগঞ্জ থানাধীন রায়লা এলাকায় সংশ্লিষ্ট থানা-পুলিশের সহায়তায় অভিযান পরিচালনা করে আসামি মো. হুমায়ুন ও (৩০) মো. ওসমান মিয়াকে (৬০) এবং রাত আড়াইটার সময় মিঠামইন থানাধীন বৈরাটি বাহেরচর এলাকা থেকে মো. সিরাজ মিয়া (৫৫) এবং মো. নাদিফ মিয়া ওরফে নাদিমকে (২৩) গ্রেপ্তার করা হয়।

আসামিদের ইতিমধ্যে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত অন্য আসামিদের তদন্ত সাপেক্ষে গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।