মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিউইয়র্কের জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্বাগত জানান যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম. শহিদুল ইসলাম এবং জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতেমা। ছবি: পিআইডি

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্কে পৌঁছেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত শুক্রবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিউইয়র্কের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন। ফিনল্যান্ডের রাজধানী হেলসিঙ্কিতে দুদিনের যাত্রাবিরতি করেন তিনি। খবর বাসসের।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম জানান, ‘ বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ভিভিআইপি চার্টার্ড ফ্লাইট স্থানীয় সময় রোববার বিকেল ৫টা ৩০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী এবং তাঁর সফরসঙ্গীদের নিয়ে নিউইয়র্কের জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায়।’

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম. শহিদুল ইসলাম এবং জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি এবং রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতেমা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানান বলেও প্রেস সচিব উল্লেখ করেন।

মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন এবং পিএমও সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে রয়েছেন।

বিমানবন্দর থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে সুসজ্জিত মোটর শোভাযাত্রাসহকারে লোটে নিউইয়র্ক প্যালেসে নিয়ে যাওয়া হয়। নিউইয়র্কে থাকাকালীন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেখানেই অবস্থান করবেন।

নিউইয়র্কে যাওয়ার পথে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং তাঁর সফরসঙ্গীরা ফিনল্যান্ডের রাজধানী হেলসিঙ্কিতে দুই দিনের যাত্রাবিরতি শেষে স্থানীয় সময় রোববার বিকেল ৪টা ১৬ মিনিটে হেলসিঙ্কির ভ্যানটা বিমানবন্দর ত্যাগ করেন।

২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ইতালি সফরের পরে এটি তাঁর প্রথম বিদেশ সফর।মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন এবং সেখানে বেশ কয়েকটি উচ্চপর্যায়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য সরকারি সফরের অংশ হিসেবে ১৯ থেকে ২৩ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে অবস্থান করবেন।
নিউইয়র্কে অবস্থানকালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৪ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সদর দপ্তরে সাধারণ পরিষদের ৭৬তম অধিবেশনে ভাষণ দেবেন।

১৯৭৪ সালে জাতিসংঘে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণের অনুসরণ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিগত বছরগুলোর মতো এবারও বাংলায় তাঁর ভাষণ দেবেন।
আগামী ২০ সেপ্টেম্বর যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এবং জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের আহবানে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের একটি ছোট দলের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে যোগ দেবেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। পরে তিনি একটি গাছ লাগাবেন এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে তাঁর সম্মানে জাতিসংঘ সদর দপ্তরের উত্তর লনে ইউএন গার্ডেনে একটি বেঞ্চ উৎসর্গ করবেন। বিকেলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ‘সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট সলিউশন নেটওয়ার্ক’ শীর্ষক একটি ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।

২১ সেপ্টেম্বর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ সদর দপ্তরে সাধারণ বিতর্কের উদ্বোধনী অধিবেশনে যোগ দেবেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত কর্তৃক আয়োজিত ‘বিজনেস গোলটেবিল: ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল’ অনুষ্ঠানেও যোগ দেবেন।
২২ সেপ্টেম্বর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ডারবান ডিক্লারেশন অ্যান্ড প্রোগ্রাম অব অ্যাকশন গ্রহণের ২০তম বার্ষিকী উপলক্ষে সাধারণ পরিষদের একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে যোগ দেবেন।

এ ছাড়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ‘হোয়াইট হাউস বৈশ্বিক কোভিড-১৯ শীর্ষ সম্মেলন: মহামারির সমাপ্তি এবং আরও ভালো অবস্থা গড়ে তোলা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে যোগদান করবেন এবং বক্তৃতা দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

সেদিন বিকেলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ‘রোহিঙ্গা সংকট: একটি টেকসই সমাধানের জন্য করণীয়’ শীর্ষক একটি উচ্চপর্যায়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন এবং সেখানে পূর্বে রেকর্ড করা বক্তৃতা দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

২৩ সেপ্টেম্বর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘের সুইডিশ মিশন আয়োজিত ‘জাতিসংঘের সাধারণ কর্মসূচি: সমতা ও অন্তর্ভুক্তি অর্জনের পদক্ষেপ’ শীর্ষক নেতাদের নেটওয়ার্কের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। তিনি জাতিসংঘ সদর দফতরে জাতিসংঘ মহাসচিব কর্তৃক আহ্বান করা ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে দশক কর্মসূচির অংশ হিসেবে খাদ্য ব্যবস্থা শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন।

নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের সাইডলাইনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বেশ কয়েকজন বিশ্বনেতার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেট ফ্রেডেরিকসেন, বার্বাডোসের প্রধানমন্ত্রী মিজ মিয়া আমোর মোটলি কিউসি, নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুট, নেদারল্যান্ডের রানি ম্যাক্সিমা, মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সোলিহ এবং ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট এনগুয়েন জুয়ান ফাইক। এ ছাড়া তিনি জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এবং ইইউ কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট চার্লস মিশেলের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা করবেন।
জাতিসংঘ অধিবেশন এবং নিউইয়র্কে অন্যান্য অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের পর মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ২৫-৩০ সেপ্টেম্বর ওয়াশিংটন ডিসি সফরের কথা রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৩০ সেপ্টেম্বর ওয়াশিংটন থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হবেন এবং হেলসিঙ্কিতে যাত্রাবিরতির পর ১ অক্টোবর দেশে ফিরবেন।