খুলনায় সিআইডি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার বাবলু শেখ হত্যা মামলার আসামি মুকুল শেখ। ছবি : বাংলাদেশ পুলিশ

খুলনার তেরখাদা থানায় জমি নিয়ে বিরোধের জেরে চাঞ্চল্যকর বাবলু শেখ হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি পুলিশ।

৪ মে সকাল আনুমানিক ১০টায় খুলনা জেলার তেরখাদা থানার আদালতপুর এলাকায় বাবলু শেখের (৫০) বসতবাড়িতে ঢুকে তাঁকে হত্যা করে পালিয়ে যায় প্রতিপক্ষের লোকজন।

ঘটনার পরপরই বিভিন্ন তদন্ত সংস্থার পাশাপাশি সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর পিপিএম (বার)-এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে ও নির্দেশনায় সিআইডির এলআইসি শাখা ছায়া তদন্ত শুরু করে।

ঘটনাস্থল ও আশপাশ এলাকার বিভিন্ন উৎস থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য সরেজমিনে সংগ্রহ করা হয়। পরে সংগৃহীত বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে ঘটনার সঙ্গে বেশ কয়েকজনের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়। এলআইসির একটি চৌকস টিম অভিযান পরিচালনা করে গতকাল সোমবার রাতে ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানার জিরাবো এলাকা থেকে ঘটনার সঙ্গে জড়িত মুকুল শেখকে (৩৭) গ্রেপ্তার করতে সমর্থ হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার হওয়া আসামি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, তাঁদের সঙ্গে মামলার ভিকটিম বাবলু শেখদের জায়গাজমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। সেই বিরোধের জের ধরে আসামি তাঁর অন্যান্য সহযোগীসহ ৪ মে সকালে টেঁটা, বল্লম, রামদা, সড়কি, ঝুঁপিসহ অন্যান্য দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ভিকটিমের বাড়িতে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর শুরু করে। ভিকটিম বাবলু শেখ তাঁর ছেলে নাজমুলসহ ঘর থেকে বের হয়ে কিছু বুঝে ওঠার আগেই মুকুল শেখ তাঁর হাতে থাকা ৪ শলাবিশিষ্ট ঝুঁপি দিয়ে বাবলু শেখের মাথা লক্ষ্য করে কোপ দিলে তিনি গুরুতর জখম হন এবং মাটিতে পড়ে যান। তখন অন্য আসামিরা তাঁর মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য এলোপাতাড়ি পিটিয়ে জখম করে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। এরপর আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে বাবলু শেখকে তেরখাদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় বিষয়ে বাবলু শেখের ছেলে নাজমুল শেখ (৩১), মুকুল শেখকে (৩৭) প্রধান আসামি করে এবং অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে তেরখাদা থানার মামলা করেন।

মধ্যযুগীয় কায়দায় জমি দখলকে কেন্দ্র করে এ ধরনের নৃশংস ও বর্বরোচিতভাবে ঝুঁপি দিয়ে হত্যার চাঞ্চল্যকর ঘটনার প্রধান আসামিকে দ্রুততম সময়ে গ্রেপ্তার সিআইডি তথা বাংলাদেশ পুলিশের একটি উল্লেখযোগ্য অর্জন।