হত্যাকারী শাকিল। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলায় হোটেল কর্মী রিনা বেগম (৩৭) হত্যার রহস্য উদ্ঘাটিত হয়েছে।

শাকিল নামে রিনার এক প্রেমিক তাঁকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছেন।

সোমবার (১৯ জুন) ভোরে ভৈরব বাজার কাঠপট্টি এলাকার একটি বাসা থেকে ভৈরব থানা-পুলিশ শাকিলকে আটকের পর তিনি হত্যার কথা স্বীকার করেন।

শাকিলের বাড়ি হবিগঞ্জের লাখাই থানা এলাকার লাখাই গ্রামে। তিনি ভৈরবের নিরালা হোটেলে কাজ করতেন। সেখানেই ভাড়া বাসায় থাকতেন।

গত শনিবার বিকেলে ভৈরবের কাঠপট্টি এলাকার একটি বাসা থেকে রিনা বেগমের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই দিন নিহতের মামাতো ভাই হোটেল শ্রমিক দুলালকে গ্রেপ্তার করা হয়।

জানা গেছে, শেরপুরের নকলা থানা এলাকার রিনা বেগম দুই ছেলে ও মামাতো ভাই দুলালকে নিয়ে ভৈরবের কাঠপট্টি এলাকায় স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে একটি বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন। রিনা বেগম ও তাঁর ছেলে এবং মামাতো ভাই ভৈরবের বিভিন্ন হোটেলে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। শাকিল হোটেল বয় হিসেবে কাজ করার সুবাদে রিনার সঙ্গে পরিচয় ও প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে শাকিল জানতে পারেন দুলালের কথা। এ নিয়ে দুলালের সঙ্গে তাঁর দ্বন্দ্ব হয়। শাকিল চেষ্টা করেও রিনা বেগমকে দুলালের কাছ থেকে সরাতে পারেননি।

ঘটনার দিন সকালে এ নিয়ে রিনার সঙ্গে শাকিলের কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে তাঁকে হত্যার পর পালিয়ে যান শাকিল। ঘটনার সময় কেউ বাসায় ছিলেন না। খবর পেয়ে দুলাল ও রিনার সন্তানেরা বাসায় এসে দেখেন রিনার মরদেহ। খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে। এ সময় পুলিশ দুলালকে আটক করে এবং পরে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠিয়ে দেয়।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ভৈরব থানার পুলিশ পরিদর্শক মিজানুর রহমান দুলালকে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারেন, রিনার বাসায় হোটেল শ্রমিক শাকিলের যাতায়াত ছিল। সোমবার ভোরে শাকিলকে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদ করলে বেরিয়ে আসে হত্যার নির্মম কাহিনি।

রিনা বেগমের খোয়া যাওয়া ২টি মোবাইল ফোন ও রিনা বেগমের রুমে থাকা ১টি এলইডি টিভি মনিটর তাঁর হেফাজতে রয়েছে বলে শাকিল স্বীকার করেন। পরে তাঁকে নিয়ে কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদী থানাধীন পৌরসভা এলাকায় এক আত্মীয়ের বাসা থেকে ওই ২টি মোবাইল ফোন ও এলইডি টিভি মনিটর জব্দ করা হয়।

আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার পর শাকিলকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।