পুলিশের হেফাজতে গ্রেপ্তার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ।

মানিকগঞ্জের দৌলতপুরে নামের মিল থাকার সুযোগ নিয়ে এক মৃত মুক্তিযোদ্ধার সনদ জালিয়াতি করে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার পরিচয় দানকারী এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ।

আজ ৬ এপ্রিল আব্দুস সামাদ নামে ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা মূলে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়।

প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদ মানিকগঞ্জ জেলার সিঙ্গাইর উপজেলার সাবেক জামসা ইউনিয়নের বর্তমান গোলাডাঙ্গা ইউনিয়নের মৃত কলিম উদ্দিনের ছেলে । তিনি ২০০৭ সালে মারা যান।

নামের সাথে মিল থাকায়  দৌলতপুর উপজেলার ধামশ্বর ইউনিয়নের গালা গ্রামের আব্দুস সামাদ ছেলের সহযোগিতার মুক্তিযোদ্ধা হয়ে যান ভুয়া ঠিকানা ব‍্যাবহার করে। তার ছেলে ময়নাল হোসেন মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ে ভুল তথ্য দিয়ে তার বাবাকে মুক্তিযোদ্ধা বানান।

ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সামাদের আসল বাড়ি সাটুরিয়া উপজেলার তেবাড়ীয়া গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের মৃত মুন্নাফের ছেলে।তিনি বর্তমান ঠিকানা সিংগাইর উপজেলা দেখিয়ে সাবেক ঠিকানা দৌলতপুর উপজেলার গালা গ্রাম বলে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার এবং  সিংগাইর উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে পরিচয় দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন।

এই খবর জানতে পেরে  প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার মেয়ে সেলিনা বেগম( ৪৮) সিংগাইর থানায় একটি প্রতারণা মামলা করেন। পরে মামলাটি আমলে নিয়ে মহামান‍্য আদালত তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি করেন। এই ওয়ারেন্ট দৌলতপুর থানায় পৌছালে গতকাল বুধবার ৫ এপ্রিল রাতে এস আই রুস্তুম আলী ও এ এস আই মাসুদ রানাসহ একটি টিম সাটুরিয়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে দৌলতপুর থানায় নিয়ে আসে।পরে তাকে মানিকগঞ্জ পাঠানো হয়।

এ বিষয়ে মামলার বাদী সেলিনা বেগম বলেন, আমার পিতার নাম আব্দুস ছামাদ তিনি ১৯৭১সালে ভারতে প্রশিক্ষণ নিয়ে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে দেশ স্বাধীন করেন। আমার পিতা ২০০৭ সালে মারা যান।মারা যাওয়ার পর আমার পিতার কাগজপত্র দেখে জানতে পারি সে মুক্তিযুদ্ধ করেছেন।পরে আমরা কাগজ পত্র নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা অফিসে যোগাযোগ করি।যোগাযোগ করলে দেখা যায় ভারত থেকে যে তালিকা এসেছে সেই তালিকায় আমার পিতার নাম রয়েছে। পরে আমরা মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ে দৌড় ঝাপ করে কাগজ পত্র ঠিক করি। ২০১৮ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে আমার মা হালিমা বেগম সরকার থেকে নিয়মিত ভাতা পাচ্ছেন।

সেলিনা বেগম আরো বলেন, আমার মা এখনও গ্রামের বাড়িতে থাকেন। আমরা ১ভাই ১বোন। আমি ঢাকা আমার স্বামীর কাছে থাকি এবং  আমার ভাই দক্ষিণ আফ্রিকা থাকেন ২০১৮ সাল থেকে। এই সুযোগ নিয়ে প্রতারক আব্দুস সামাদ আমার পিতার ঠিকানা ব্যবহার করে মুক্তিযোদ্ধা সনদ,জাতীয় পরিচয় পত্র  ভুয়াভাবে বানানোর চেষ্টা করেছেন। আমি খবর পেয়ে ব সিংগাইর থানায় ২০২২ সালের ২১শে সেপ্টেম্বর একটি মামলা দায়ের করি।

এ বিষয়ে  এ এস আই মো. মাসুদ ও এ এসআই মো. রুস্তম আলী বলেন, গতকাল রাতে অভিযান চালিয়ে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদকে সাটুরিয়া এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।