ভারতের কেরালায় কনসার্টে গিয়ে পদদলিত হয়ে চার শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। গতকাল শনিবার কোচিন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির অডিটোরিয়ামে এ ঘটনায় আহতের সংখ্যা ৫০ ছাড়িয়েছে। সেখানে তেমন ভিড় না থাকলেও কনসার্ট শুরুর আগেই কীভাবে এমন ঘটনা ঘটল, তা নিয়ে আলোচনা চলছে।

কেরালা পুলিশের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলেছে, অডিটোরিয়ামটিতে প্রবেশ এবং প্রস্থানের জন্য একটি গেটই খোলা ছিল। আয়োজকেরা কেবল কনসার্টের পাস থাকা ব্যক্তিদেরই প্রবেশাধিকার দিচ্ছিলেন। অন্যদিকে, অডিটোরিয়ামের বাইরে ছিল দীর্ঘ লাইন। গণমাধ্যমের কাছে এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, অডিটোরিয়ামের বাইরে পাস না থাকা স্থানীয় অনেক মানুষই ভিড় করেছিল।

পুলিশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা অজিত কুমার জানান, অডিটোরিয়ামের দর্শক ধারণক্ষমতা ছিল অন্তত এক হাজার। বৃষ্টি শুরুর সময় অনেক আসনই খালি ছিল। আর অনুষ্ঠানও তখন শুরু হয়নি। হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হলে বাইরে দাঁড়ানো অপেক্ষমাণরা লাইন ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করার চেষ্টা করে। ধাক্কাধাক্কিতে কয়েকজন নিচে পড়ে যায়। তাদের শরীর মাড়িয়ে এগিয়ে যায় অন্যরা। আর এভাবেই মৃত্যু ঘটে চার শিক্ষার্থীর।

স্থানীয় সূত্রমতে, এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার পেছনে রয়েছে আরও একটি কারণ। প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থীরা প্রথমে প্রবেশ করবে বলে ঘোষণা করেছিল অনুষ্ঠানের আয়োজকেরা। অন্যান্য বিভাগের শিক্ষার্থীরা তাদের পালা আসার জন্য অস্থির হয়ে ছিল। বৃষ্টি শুরু হলে বিশৃঙ্খলার সুযোগে লাইন ভেঙে ভেতরে প্রবেশের সুযোগ দেখতে পেয়ে সেটাই করেছিল তারা। এর ফলশ্রুতিতেই ঘটে মৃত্যুর মতো দুর্ঘটনা।

এনডিটিভি বলছে, অডিটোরিয়ামে প্রবেশের ধাপগুলো অনেক বেশি খাঁড়া। ফলে দৌড়ে যাওয়ার সময় কয়েকজন ছাত্র ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছিল।

পৌরসভার কাউন্সিলর প্রমোদ এই দুর্ঘটনার জন্য প্রবেশ এবং প্রস্থানের জন্য মাত্র একটি গেট ব্যবহার করাকে দায়ী করেছেন। কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন গতকাল রাতে মন্ত্রীদের জরুরি বৈঠক ডাকেন। সেখানে শিক্ষার্থীদের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করা হয়। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীনা জর্জ আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলোর সমন্বয় করবেন বলে এ সময় জানান মুখ্যমন্ত্রী।

নিহত শিক্ষার্থীদের পরিচয় জানা গেছে। তাদের নাম- অতুল থামবি, অ্যান রুফথা, সারা থমাস এবং অ্যালউইন থাইকাত্তুশেরি। আহতদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে ৩০ জনেরও বেশি। সূত্র: আজকের পত্রিকা।