ফরিদপুর জেলার আলফাডাঙ্গায় বিজয় দিবসের রাতে ৩টি মন্দিরের ১০টি প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় সনাতন ধর্মাবলম্বী এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

আজ সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) দুপুরে ফরিদপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে ওই যুবককে গ্রেপ্তারের বিষয়টি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শাহজাহান।

এর আগে রোববার (১৭ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ২টার দিকে জেলার আলফাডাঙ্গা উপজেলার চুয়াল্লিশের মোড় নামক এলাকা থেকে ওই যুবককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গ্রেপ্তার হওয়া যুবকের নাম সনাতন মালো ওরফে সোনাই মালো (৪৫)। তিনি আলফাডাঙ্গা পৌর সদরের মৃত নিতাই মালোর ছেলে।

বিজয় দিবসের রাতে আলফাডাঙ্গা পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের এক কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থিত কুশুমদী মহল্লার কেন্দ্রীয় হরিমন্দির, শ্রীবিষ্ণু পাগলের মন্দির এবং ৭ নম্বর ওয়ার্ডে আলফাডাঙ্গা মহল্লার শ্রীশ্রী দামুদর আখড়া মন্দিরে ভাঙচুর করা হয়। এর মধ্যে হরিমন্দিরের দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী, মনসা ও মহাদেব; বিষ্ণু পাগলের মন্দিরের মহাদেব ও মনসা এবং দামুদর আখড়া মন্দিরের মহাদেব, শিবলিঙ্গ ও নারায়ণ, এই ১০টি প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়।

এ ব্যাপারে পরদিন ১৭ ডিসেম্বর আলফাডাঙ্গা থানায় একটি মামলা করা হয়।

পুলিশ সুপার বলেন, এ ঘটনার পরে বিষ্ণু পাগলের মন্দিরের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ওই রাতে ২টা ১৫ মিনিটের দিকে এক ব্যক্তি মন্দিরে প্রবেশ করে এবং রাত ২টা ৩৬ মিনিটের দিকে বের হয়ে আসে। পরে স্থানীয়দের কাছে জিজ্ঞাসাবাদে তাঁর নাম-পরিচয় বেরিয়ে আসে। এরপর তথ্য অনুযায়ী সোনাই মালোকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশ সুপার বলেন, গ্রেপ্তারের পর আসামি সনাতন মালো এ ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান, সাপ তাঁকে দুই বছর যাবৎ স্বপ্নে তাড়া করে বেড়াচ্ছে। তাই তিনি বিভিন্ন পূজামণ্ডপে যে সকল মূর্তি ও প্রতিমার সাথে শিব বা মহাদেবের মূর্তি আছে, সেগুলোর মুখমণ্ডল হাত দিয়ে ভেঙে ফেলেন। কারণ, শিব বা মহাদেবের গলায় সাপ জড়ানো থাকে। পাশাপাশি মূর্তির সাথে মাটির তৈরি যে সাপ থাকে, সেগুলোও ভেঙে ফেলেন। সোনাই মালো আরও জানান, বিষ্ণু পাগলের মন্দিরে রক্ষিত দুর্গা, সরস্বতী, লক্ষ্মীর যে প্রতিমা আছে, সেগুলো আসল না এবং তারাও সাপের রূপ ধারণ করে তাকে ভয় দেখায়। এ কারণে ওই মূর্তিগুলোর মুখ তিনি ভেঙে দেন।